রসরাজের মুঠোফোনের ফরেনসিক প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া রসরাজ দাসের মুঠোফোনের ফরেনসিক প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালত রসরাজের জামিনের বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের আংশিক শুনানি শেষে পুলিশকে এ নির্দেশ দেন। আদালত আগামী ৩ জানুয়ারি শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন এ আদেশ দেন।
রসরাজ দাস সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করেছেন—এ অভিযোগকে কেন্দ্র করে গত ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরে মন্দির ও হিন্দুদের বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে আরও কয়েক দফায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ২৮ অক্টোবর রসরাজ ওই ছবি পোস্ট করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে ২৯ অক্টোবর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওই ঘটনায় নাসিরনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাওছার হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন।

ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া রসরাজের জামিন চেয়ে আদালতে আজ দ্বিতীয় দফায় আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী মো. নাসির মিয়া। তিনি বলেন, রসরাজ তাঁর মুঠোফোন থেকে এ ধরনের কোনো ছবি পোস্ট করেননি বলে ইতিমধ্যে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

গত ২৮ নভেম্বর জেলা পুলিশের কাছে পাঠানো এক প্রতিবেদনে রসরাজের ব্যবহৃত মুঠোফোন থেকে ধর্ম অবমাননাকর সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয়নি বলে উল্লেখ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরেনসিক বিভাগ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইনও এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ফেসবুকের ওই পোস্ট রসরাজের মুঠোফোন থেকে করা হয়নি বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। অন্য জায়গা থেকে তা পোস্ট করা হয়েছে। অন্য কেউ রসরাজের ফেসবুক আইডি ও পাসওয়ার্ড জানত। নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়নের হরণ বেড় বাজারে আল-আমিন সাইবার পয়েন্ট অ্যান্ড স্টুডিও থেকেও ছবিটি পোস্ট করা হয়নি। সেখান থেকে জব্দ করা কম্পিউটারসহ বিভিন্ন যন্ত্র পরীক্ষা করে এ মতামত দেওয়া হয়েছে।

ওই স্টুডিওর মালিক জাহাঙ্গীর আলম ফেসবুকের পোস্টটি প্রিন্ট করে এলাকায় প্রচারপত্র আকারে বিতরণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর পুলিশ তাঁকে পৌর শহরের কালাই শ্রীপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। নাসিরনগরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটটি মামলায় ১০২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।