মামলাজট থেকে মুক্তি পেতে হবে: প্রধান বিচারপতি

বিচারব্যবস্থায় মামলাজট ও বিচারে দীর্ঘসূত্রতা জনগণের বিচার লাভের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই মামলাজটের দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে হবে।’ বিচারকাজে অপ্রয়োজনীয় সময়দানের সংস্কৃতি পরিহার করতে তিনি বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান।

আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন ২০১৬-এর দ্বিতীয় দিনে কর্ম-অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের নিম্ন আদালতে প্রায় ২৭ লাখ মামলার জট আমরা বয়ে বেড়াচ্ছি। অনিষ্পন্ন মামলার এই বোঝা আদালত ব্যবস্থাপনাকে গতিহীন করতে পারে। মামলার ব্যয় বাড়িয়ে দিতে পারে। এ কারণে মানুষ তাঁর বিরোধকে আদালতে আনতে নিরুৎসাহিত হতে পারে। আগ্রহী হতে পারে বিচারবহির্ভূত পন্থায় অর্থ বা পেশিশক্তির মাধ্যমে সুবিধাজনক সমাধান প্রাপ্তিতে। ফলে আইনের শাসনের প্রতি জনগণের আস্থা শিথিল হতে পারে। সমাজে অসহিষ্ণুতা ও সংঘাতের প্রসার ঘটতে পারে।’

আদালতের পুরো সময়কে বিচারকাজে ব্যয় করার জন্য আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি। জেলা জজদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জেলা জজ নিজে সঠিক সময়ে আদালতে আসবেন। পুরো বিচারিক সময় বিচারকাজে ব্যাপিত থাকবেন। অন্য বিচারকদের একইভাবে নিয়মানুবর্তী ও সময়নিষ্ঠ হতে সহায়তা করবেন—এটিই প্রত্যাশা।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আইনজীবীরা বিচারব্যবস্থার অপরিহার্য অঙ্গ। প্রকৃতপক্ষে, একজন আইনজীবী কোর্টের অফিসার। তাঁর প্রাথমিক দায়িত্ব হলো সুবিচার নিশ্চিতকরণে আদালতকে সাহায্য করা। আইনজীবীদের যুক্তিসংগত কোনো বৈধ দাবিদাওয়া থাকলে জেলা জজ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুসারে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু কোনোভাবেই আইন ও বিধির বাইরে পদক্ষেপ নেবেন না।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বিচারকদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘মানসম্মত সুবিচার প্রাপ্তির ক্রমবর্ধমান জন-আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে অবকাঠামোগত ঘাটতিসহ বহুবিধ সীমাবদ্ধতার মাঝে আপনাদের কাজ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে বিনা বিলম্বে, স্বল্পব্যয়ে ও প্রকাশ্যে বিচারের মাধ্যমে আইনসম্মত সুবিচার প্রাপ্তি প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। আমরা নাগরিকদের মানসম্মত সুবিচার নিশ্চিতকরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে কোনো সীমাবদ্ধতাই অজুহাত হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।’