কাজ না করায় বরাদ্দ ফেরত দিতে চিঠি

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) এবং টেস্ট রিলিফের (টিআর) পাঁচটি প্রকল্পের কাজ না করায় বরাদ্দ ফেরত দিতে প্রকল্পের সভাপতিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুজন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বরাদ্দ নিয়ে কাজ না করায় এসব প্রকল্প নিয়ে গত বছরের ৯ অক্টোবর প্রথম আলোয় ‘জামালগঞ্জে কাজ না করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এসব প্রকল্পের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। প্রকল্পের কাজের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও সভাপতিরা প্রকল্পের কোনো কাজ করেননি।

জানা গেছে, উপজেলা সদরের লক্ষ্মীপুর গ্রামের লালনের বাড়ি থেকে নদীপাড় পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের জন্য তিন মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ নেন জামালগঞ্জ সদর ইউপির সদস্য শারমিন সুলতানা। কিন্তু তিনি কোনো কাজ করেননি। তাঁকে ৭২ হাজার ৬৭০ টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। একইভাবে নয়াহালট বড় মসজিদে সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য সাড়ে চার মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ নিয়েছিলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জিয়াউর রহমান। কাজ না করায় তাঁকে ৭২ হাজার ৬৭০ টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। একই ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনির হোসেন ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ নিয়েছিলেন ভুঁইয়াহাটি গ্রামের রাস্তা সংস্কার ও মসজিদে সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য। কাজ না করায় তাঁকে ৩০ হাজার টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের রাস্তায় সংস্কারের জন্য ঘাগটিয়া গ্রামের আল আমিন ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ নিয়ে কোনো কাজ করেননি। তাঁকে এই টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।

ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমি গ্রামবাসী ও মসজিদ কমিটির সঙ্গে কথা বলে সোলার প্যানেলের পরিবর্তে মসজিদে একটি বড় স্টিলের গেট নির্মাণ করে দিয়েছি। কমিটির পক্ষ থেকে আমাকে প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেন আমাকে টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে বুঝতে পারছি না।’

শারমিন সুলতানা বলেন, ‘টাকা ফেরত দেওয়ার চিঠি পেয়েছি। কাজ যে একেবারেই করিনি তা কিন্তু নয়। এখন চিন্তাভাবনা করে দেখি কী করা যায়।’

ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম ও মনির হোনে তাঁদের টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে পিআইও কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চিঠি পাওয়ার পর দুজন ইউপি সদস্য টাকা ফেরত দিয়েছেন। যাঁরা টাকা ফেরত দেবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।