সাংসদের সম্বন্ধীকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ

সাংসদ মনজুরুল ইসলাম হত্যা
সাংসদ মনজুরুল ইসলাম হত্যা

গাইবান্ধার সাংসদ মনজুরুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার তাঁর সম্বন্ধী (স্ত্রীর বড় ভাই) বেদারুল আহসানকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
সাংসদের গ্রামের লোকজন পুলিশকে জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের সময় বেদারুলের সঙ্গে দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে। সেই ব্যক্তির পরিচয় জানতে গতকাল ওই গ্রাম থেকে দুজন প্রত্যক্ষদর্শী কিশোরকে সুন্দরগঞ্জ থানায় ডেকে নিয়ে বেদারুলের মুখোমুখি করে পুলিশ। বেদারুল পুলিশকে বলেছেন, সেদিন যে তাঁর সঙ্গে ছিলেন, তিনি তাঁর এক মামাশ্বশুর।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু বেদারুল ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন, তাই তদন্তের স্বার্থে প্রায়ই তাঁকে থানায় ডেকে নানা কিছু জানতে চাওয়া হয়। গতকালও তাঁকে সে রকম ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তবে বেদারুলের সঙ্গে থাকা লোকটি সম্পর্কে গ্রামের লোক যে কথা বলছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে কিছু বলেননি ওসি।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা মাস্টারপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর সাংসদ খুন হওয়ার সময় তাঁর বাড়ির সামনের আঙিনায় খেলছিল ১৫ কিশোর। তাদের মধ্যে দুজন কয়েক দিন পরে গ্রামের লোকদের জানায়, হত্যাকাণ্ডের সময় তারা সাংসদের সম্বন্ধী বেদারুল ইসলামের সঙ্গে দাড়িওয়ালা এক লোককে দেখেছে। এর আগে বা পরে সেই লোককে তারা দেখেনি। পরে গ্রামবাসী বিষয়টি পুলিশকে জানায়। এরপর গতকাল গ্রাম থেকে দুই কিশোরকে থানায় ডেকে নিয়ে বেদারুলের মুখোমুখি করে পুলিশ।

ওই দুই কিশোরের একজনের নিকটাত্মীয় প্রথম আলোকে বলেন, ওই কিশোরদের সামনে বেদারুলকে বসিয়ে পুলিশ বিষয়গুলো জানতে চায়। কিশোরেরা পুলিশের সামনেই বেদারুলের সঙ্গে তারা কাকে দেখেছিল, সেই লোকটির বর্ণনা দেয়। কিশোরদের সামনে বেদারুল বলেন, সঙ্গে থাকা লোকটি তাঁর মামাশ্বশুর ছিল। পরে পুলিশ মামাশ্বশুরকে থানায় ডেকে আনতে বলেন। বেদারুল ফোন করে এক মামাশ্বশুরকে ডেকে আনেন। কিন্তু কিশোরেরা ঘটনাস্থলে থাকা লোকটি আর এই মামাশ্বশুর এক নয় বলে পুলিশকে জানায়। এরপর এখন বেদারুলের সঙ্গে থাকা ওই লোক কে, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

গত রাত ১০টা পর্যন্ত থানা থেকে বাসায় ফেরেননি বেদারুল। রাত ১০টার দিকে বেদারুলের ভাই মো. বাদল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, থানা থেকে ডেকে পাঠালে বেলা দেড়টার দিকে বেদারুল বাসা থেকে যে বের হয়েছেন, এখনো ফেরেননি।

গত ৩১ ডিসেম্বর গ্রামের বাড়িতে সাংসদ মনজুরুল খুনের সময় তাঁর আশপাশে রহস্যজনক কারণে কেউই ছিলেন না। বাড়ির সাতজন কর্মী নানাভাবে ব্যস্ত ছিলেন। খুন হওয়ার মিনিটখানেক আগে তাঁর স্ত্রী ও স্ত্রীর বড় ভাই বেদারুল ওই ঘর ছেড়ে পাশের ঘরে যান। এ ছাড়া সে সময়ের ঘটনার বর্ণনা নিয়েও রয়েছে নানা অস্পষ্টতা।

ইউপি সদস্যকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন

মনজুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ইউপি সদস্য ও ডিশ ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলামকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। গত সোমবার গাইবান্ধার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।

আদালতের বিচারক ময়নুল হাসান ইউসুফ আজ বুধবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন।