বিরোধিতার মুখে বিএনপির সম্মেলন আজ, উত্তেজনা

বরিশালে দলীয় প্রতিপক্ষের বিরোধিতার মুখে আজ শনিবার বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে উপজেলা বিএনপির একটি অংশ আজ পৌর শহরের চারটি স্থানে কর্মিসভা ডেকেছে। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

পৌর শহরের সাহেবগঞ্জ সড়কে সাবেক সাংসদ ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন খানের বাসভবন চত্বরে সকাল ১০টায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আট বছর পর এই সম্মেলন হচ্ছে। এদিকে সম্মেলনের বিরোধিতা করে বাকেরগঞ্জ শহরের চারটি স্থানে কর্মী সমাবেশ ডেকেছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমানের অনুসারীরা।

এর আগে সম্মেলন স্থগিত করার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বরিশালে সংবাদ সম্মেলন এবং বিকেলে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনে খলিলুর রহমানের অনুসারী নেতা-কর্মীরা বাকেরগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তাঁরা আবুল হোসেন খানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।

খলিলুর রহমান অভিযোগ করেন, আবুল হোসেন খান একতরফাভাবে উপজেলার সব কটি ওয়ার্ড এবং ইউনিয়নে বিএনপির ‘পকেট কমিটি’ করেছেন। তিনি তাঁর অনুসারীদের নিয়ে একতরফা সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। এ কারণে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীরা কেউ সম্মেলনে যাবেন না। আমাদের পক্ষ থেকে পৌর শহরের চারটি স্থানে কর্মী সমাবেশ ডাকা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত। নেতা-কর্মীরাও উত্তেজিত।

পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল হোসেন খান বলেন, বাকেরগঞ্জে অপর পক্ষ বলতে কিছু নেই। বিএনপিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারার অংশ হিসেবে সরকার ও পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় কিছু লোক বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করছেন। তাঁরা বিগত দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন না। তাঁরা দলের কোনো কার্যক্রমেও অংশ নেননি। তাঁরা (খলিলুর রহমান) মূলত সরকারের এজেন্ট বলে দাবি করেন আবুল হোসেন।

বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ থাকায় বাইরে সম্মেলন করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আবুল হোসেন খান তাঁর বাসভবনে সম্মেলন করবেন। অপর পক্ষকে (খলিলুর রহমান) নিজেদের মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে ফেলার জন্য বলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে।

এর আগে বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছিল ২০০৯ সালে। ওই সময় আবুল হোসেন খানকে সভাপতি এবং খলিলুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কয়েক মাস আগে ওই কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পরে কেন্দ্রীয় কমিটি আবুল হোসেন খানকে আহ্বায়ক করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে। সদস্যসচিব করা হয় সাবেক সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমানকে। কিন্তু ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগে খলিলুর রহমান তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তাঁরা সম্মেলন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন।