আনন্দ আড্ডায় শতবর্ষপূর্তি

১৯১৭ সালে যাত্রা শুরু করে নওগাঁ জিলা স্কুল। এক এক করে কেটে গেছে ১০০টি বছর। এ উপলক্ষে আবার বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে পা পড়ল প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের। আড্ডা আর স্মৃতিচারণায় ফেলে আসা দিনগুলো খুঁজে পেলেন তাঁরা।
শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে গত শুক্রবার থেকে দুদিনের এ উৎসব শুরু হয়। ১৯১৭ সালে ছোট্ট পরিসরে নওগাঁ করোনেশন ইংলিশ স্কুল নামে যাত্রা শুরু করে নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নওগাঁ জিলা স্কুল। তখন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করানো হতো। ১৯৪২ সালে করোনেশন হাইস্কুলে রূপান্তরিত হয়। ১৯৬১ সালে এর নাম করা হয় ইউনাইটেড হাইস্কুল। ১৯৮৫ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। এর নতুন নাম রাখা হয় নওগাঁ সরকারি জিলা স্কুল।
উৎসবের জন্য বিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় মনোরম সাজে। বিদ্যালয়ের পুরো ভবন আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। ‘শতাব্দীর মিলন গানে, এসো মিলি প্রাণের টানে’ স্লোগানে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি পালন করা হয়।
শুক্রবার সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের। দুপুরে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শতবর্ষপূর্তির ১০০টি বেলুন এবং পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা। সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
১৯৯৫ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থী মাগফুরুল হাসান বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে এসে মনে হচ্ছে যেন প্রায় ২৫ বছর আগের সেই স্কুলজীবনে ফিরে গেছি। পুরোনো বন্ধুদের অনেক দিন পর কাছে পেয়ে ভালো লাগছে।’
গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় মঞ্চে শুরু হয় স্মৃতিচারণা পর্ব। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা একে একে মঞ্চে উঠে বলছিলেন পুরোনো কথা। তাঁদের মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এনামুল হক। তিনি বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে পেয়েছি ভালোবাসা। তাঁরা আমাকে শিখিয়েছেন কীভাবে পথ চলতে হয়। প্রিয় সতীর্থদের সঙ্গে কাটানো সেসব রঙিন দিনের কথা আজও ভুলতে পারি না।’
আরেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী লন্ডনপ্রবাসী তানভীর আহমেদ বলেন, ‘৩৫ বছর পর বিদ্যালয়ে এসে দেখি, আমার প্রিয় শিক্ষকদের অনেকেই মারা গেছেন। আমাদের সময়কার মাত্র তিনজন শিক্ষক বেঁচে আছেন। তাঁদের দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লেগেছে।’