আটক চিকিৎসক সিভিল সার্জনের জিম্মায় মুক্ত

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক এম এ হান্নানের বিরুদ্ধে নাটোরের জনসেবা হাসপাতালের এক রোগীর শরীর থেকে কিডনি চুরির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে গত শুক্রবার তাঁকে আটক করা হলেও রাতে সিভিল সার্জনের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

নাটোর থানা ও সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নাটোরের বেসরকারি জনসেবা হাসপাতাল থেকে শুক্রবার বিকেলে এম এ হান্নানকে এক রোগীর কিডনি চুরির অভিযোগে আটক করে পুলিশ। অভিযোগটি করেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার ছোট চৌগ্রামের ফজলু বিশ্বাসের স্ত্রী আসমা বেগম। তিনি দাবি করেন, প্রায় এক বছর আট মাস আগে পেটের ব্যথা নিয়ে তিনি জনসেবা হাসপাতালে ভর্তি হলে পিত্তথলি থেকে পাথর অপসারণের অস্ত্রোপচার করেন এম এ হান্নান। এর প্রায় এক মাস পর চিকিৎসকের পরামর্শে আবারও অস্ত্রোপচার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। আবারও তিনি ওই হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করে জানতে পারেন, তাঁর শরীরে ডান পাশের কিডনি নেই। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অভিযোগ করলে তারা টালবাহানা করতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে এম এ হান্নানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে চিকিৎসক মহল থেকে তদবির শুরু হয়। অবশেষে শুক্রবার গভীর রাতে সিভিল সার্জনের জিম্মায় কিছু শর্তে ওই চিকিৎসককে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ তাঁকে জিম্মায় গ্রহণ করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। শর্তানুযায়ী তিন দিনের মধ্যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ভুক্তভোগী রোগী আসমা বেগমের কিডনি অনুসন্ধান করা হবে। এ ব্যাপারে যাবতীয় ব্যবস্থা সিভিল সার্জন কার্যালয় করবে। এতে কিডনি অনুপস্থিতির বিষয়টি প্রমাণিত হলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ওই রোগীর স্বামী ফজলু বিশ্বাস গতকাল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, যদি তিন দিনের মধ্যে রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কিডনি না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়, তাহলে ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হবে।