গাড়িচালককেই সন্দেহ পুলিশ ও পরিবারের

একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোকচিত্র সাংবাদিক আফতাব আহমেদের মরদেহ গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে নেওয়া হলে তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হয়  ছবি: প্রথম আলো
একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোকচিত্র সাংবাদিক আফতাব আহমেদের মরদেহ গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে নেওয়া হলে তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হয় ছবি: প্রথম আলো

একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ আলোকচিত্র সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যার পেছনে তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িচালক কবিরকে সন্দেহ করছে পুলিশ ও নিহতের পরিবার।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রামপুরা থানায় কবিরকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন আফতাব আহমেদের ছেলে মনোয়ার আহমেদ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও কয়েক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাটি থানার পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, আফতাব আহমেদ হত্যার ঘটনায় তাঁর সাবেক দুই গাড়িচালক অলি ও নাজমুলকে গতকাল ডিবির কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গাড়িচালক কবিরকে গ্রেপ্তারের জন্য গতকাল তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা অনুযায়ী গাজীপুরে অভিযান চালানো হয়।
গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পর আফতাবের গাড়িচালক পলাতক। পুলিশের সন্দেহ, অর্থের লোভে গাড়িচালক কবির এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন। এ বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে, কবির চাকরির সময় যে ঠিকানা দিয়েছিলেন, তা ছিল ভুয়া।

গত বুধবার দুপুরে পশ্চিম রামপুরার ওয়াপদা রোডের নিজ বাড়ির শোবার ঘর থেকে হাত-পা ও গলা বাঁধা অবস্থায় আফতাব আহমেদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যার আগে তাঁকে কিছু খাইয়ে অচেতন করা হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত হতে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য মহাখালীর রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। তিন বছর আগে স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি চারতলা বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে একা থাকতেন।

গতকাল সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের হিমঘর থেকে আফতাবের লাশ ওয়াপদা রোডের বাসার সামনে নেওয়া হয়। রামপুরা জামে মসজিদে জানাজা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা হয়। জানাজায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল ইক ইনু ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁর মরদেহ মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী করবস্থানে দাফন করা হয়। 

আফতাব আহমেদের ছেলে মনোয়ার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘টাকা লুট করতেই হত্যা করা হয় বাবাকে। গাড়িচালক কবির প্রধান সন্দেহভাজন। কারণ, ঘটনার পর থেকে সে পলাতক। আমার সন্দেহ, কবির এককভাবে এ ঘটনা ঘটায়নি। খণ্ডকালীন গৃহকর্মী নাসিমা ছিল বাবার বিশ্বস্ত। ভারতে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার সময় তার কাছে বাবা একাধিকবার বাড়ির চাবি রেখে যেতেন। হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।’