জসিম-হাসান এক্সক্লুসিভ ডিভাইস তৈরিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত

কুমিল্লার চান্দিনার কুটুম্বপুরে পুলিশের ওপর নিক্ষেপ করা বোমাগুলো দুই জঙ্গিই তৈরি করেছে। জসিমউদ্দিন ও হাসান নামের দুই জঙ্গি এক্সক্লুসিভ ডিভাইস তৈরিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে তাঁরা নিজেরা বোমা বানিয়েছেন বলে অকপটে স্বীকার করেছেন। 

আজ বুধবার নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন।

এদিকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার বিকেলে চান্দিনা থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে দুই জঙ্গির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বলেন, পুলিশের ওপর নিক্ষেপ করা বোমাগুলো জসিমউদ্দিন ও হাসান তৈরি করেছেন। এ দুই জঙ্গি এক্সক্লুসিভ ডিভাইস তৈরিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এযাবৎ যত বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে, সবচেয়ে শক্তিশালী হলো উদ্ধার হওয়া ছয়টি বোমা। এ বোমাগুলো বদ্ধ ঘরে ফাটানো হলে সবকিছু উড়ে যেত। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে তাঁরা (জসিম ও হাসান) নিজেরা বোমা বানিয়েছেন বলে অকপটে স্বীকার করেন। দুই জঙ্গিদের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল।

মো. শাহ আবিদ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া দুই ব্যক্তি জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সক্রিয় সদস্য। তাঁরা আইএস কি না বলতে পারব না। তবে তাঁরা যথেষ্ট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। বোমা তৈরি ও বোমা নিক্ষেপে বিশেষজ্ঞ। তাঁদের শারীরিক ফিটনেস ভালো এবং বোমা তৈরিতে অসাধারণ সাফল্য আছে বলে মনে হচ্ছে।

মো. শাহ আবিদ হোসেন আরও বলেন, মঙ্গলবার সকালে জসিম ও হাসান চট্টগ্রামের মিরসরাই এলাকা থেকে লোকাল বাসে চড়ে ফেনীতে আসেন। এরপর তাঁরা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। গ্রেপ্তার হওয়া দুই জঙ্গির মধ্যে হাসানকে নিয়ে গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম শাখা ও জেলা পুলিশের একটি দল মিরসরাইয়ের গোভনিয়া এলাকার রেদোয়ান ভবন নামের একটি বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় হ্যান্ড গ্রেনেড, অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। ওই বাড়িতেই জঙ্গিরা অবস্থান করতেন।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কুটুম্বপুর এলাকায় দুই ‘জঙ্গি’ স্কুল ব্যাগে বোমা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এ সময় জসিমউদ্দিন ও হাসানকে পুলিশ ও জনতা আটক করে। আজ বুধবার দুপুরে চান্দিনার কুটুম্বপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশের খাদের পানি সেচে আরও একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। ওই বোমা দুপুর ১২টায় নিষ্ক্রিয় করা হয়। এ নিয়ে গত দুই দিনে ছয়টি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হলো।

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চান্দিনা থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে দুই জঙ্গির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার বাদী হলেন মহাসড়ক (হাইওয়ে) পুলিশের দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুল ইসলাম।

এদিকে ঘটনাস্থল থেকে জহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। এতে ঠিকানা রয়েছে জেলা টাঙ্গাইল, উপজেলা কালিহাতী, গ্রাম এলেঙ্গা। বাবার নাম আবদুল মজিদ ও মায়ের নাম জাহানারা বেগম। জসিমই জহিরুল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।