এবার জনস্বার্থ মামলায় ছেলেসহ রাগীব আলীর এক বছরের দণ্ড

রাগীব আলী
রাগীব আলী

সিলেটের ডাক নামের দৈনিক পত্রিকা প্রকাশনায়ও প্রতারণা করায় ছেলেসহ রাগীব আলীকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহরের বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন তালুকদার নামে একজন পত্রিকা পাঠক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় দুজনকে কারাদণ্ড ছাড়াও পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছেলে আবদুল হাই ও রাগীব আলী উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটের ডাক নামের আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি রাগীব আলী। ছেলে আবদুল হাই সম্পাদক। মামলা দায়েরের পর আবদুল হাইকে সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে রাগীব আলীর ভাতিজা আবদুল হান্নানকে সম্পাদক করা হয়।
একই আদালতে গত ২ ফেব্রুয়ারি তারাপুর চা-বাগান বন্দোবস্ত নিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতির মামলায় ছেলেসহ রাগীব আলীকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ছেলেমেয়েসহ রাগীব আলীর বিরুদ্ধে তারাপুর চা-বাগান দখল করে সরকারের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অপর একটি মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি। রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাইয়ের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এ মামলার রায় ঘোষণা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।
আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ দুই মামলায় গত বছরের ১০ আগস্ট আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে রাগীব আলী ছেলেকে নিয়ে ভারতের করিমগঞ্জে পালিয়ে যান। তাঁরা দুজন পালিয়ে যাওয়ার পরও তাঁদের পত্রিকা সিলেটের ডাক-এর প্রকাশক ও সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে রাগীব আলীর নাম এবং আবদুল হাই পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে নাম ছাপা হয়। পলাতক অবস্থায় পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব প্রতারণামূলকভাবে পালন করে প্রকাশনা আইন লঙ্ঘন হয়েছে—এ অভিযোগে গিয়াস উদ্দিন তালুকদার গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিমের আদালতে প্রতারণার অভিযোগে মামলাটি করেছিলেন। পত্রিকা প্রকাশনা আইন অনুযায়ী, কোনো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকের পালিয়ে দেশত্যাগ গুরুতর প্রতারণার শামিল। রায়ে বলা হয়, জনস্বার্থে এ প্রতারণার বিচার চেয়ে একজন পাঠক আদালতের শরণাপন্ন হওয়া এবং প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতারণার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়েছে।