চুয়াডাঙ্গায় নৃশংসভাবে কুপিয়ে কৃষককে খুন

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় এক প্রান্তিক কৃষককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন তাঁর স্ত্রীও। আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের পাকা গ্রামে গত বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কৃষকের নাম আবুল কালাম (৩১)। তিনি পাকা গ্রামের মৃত খোকাই বিশ্বাসের ছেলে। কালামের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে (২৫) যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কালামের লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে আনা হয়।

মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় কালামের বড় ভাই রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, আবুল কালাম চাষাবাদের পাশাপাশি বাড়িতে গরু পালন করে সংসার চালাতেন। এলাকায় গরু চুরি বেড়ে যাওয়ায় নিজের গরুগুলো পাহারায় রাখতে তিনি স্ত্রী আনোয়ারাকে সঙ্গে নিয়ে ঘরের বারান্দায় ঘুমাতেন। বুধবার রাতেও বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ১১টার দিকে একদল মুখোশধারী দুর্বৃত্ত বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত আবুল কালামকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পেটে ছুরি মেরে খুন করে। আনোয়ারা স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে তাঁর দুহাতে কোপানো হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় আনোয়ারাকে রাতেই ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

কারা, কী কারণে খুন করতে পারে, এমন প্রশ্নে রবিউল বলেন, ‘আমার ভাই লিকাপড়া জানে না। কুনু দল-পার্টিও করে না। জানা মতে, তার কুনু শত্রুও নেই। কারা, কী জন্যি অ্যারাম কইরে মাইরলো, বুজতি পারচি নে।’

লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন জীবননগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মকবুল হোসেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কালামের ডান কাঁধের ওপর, বাঁ কাঁধের নিচে, গলার নিচে, বুকের ডান দিকে ও মাঝে, বাঁ পাঁজরে, বাঁ হাতে, ডান হাতের কবজির ওপর, তলপেটের নিচে এবং ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। পেট দিয়ে নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গেছে।

লাশের ময়নাতদন্তকারী তিন চিকিৎসকের একজন মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক যুগ ধরে চিকিৎসা পেশায় থাকাকালে অসংখ্য লাশের ময়নাতদন্ত করেছি। কিন্তু স্মরণকালে এমন নৃশংসতা দেখিনি। লাশের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ১৫টি বড় ধরনের জখম রয়েছে।’

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, কালামের আরেক ভাই জাকির হোসেন গতকাল দুপুরে একটি হত্যা মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তদের আসামি করা হয়েছে। পুলিশ নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের কারণ ও হত্যাকারীদের খুঁজছে।