মুসার গাড়ি জব্দ নিয়ে দিনভর যা হলো

রেজিস্ট্রেশনে গাড়িটির রং ছিল সাদা। কিন্তু বদলে ফেলে করা হয় কালো। তবে রেজিস্ট্রেশন নম্বর অনুযায়ী এর মালিক ছিলেন পাবনার ফারুকুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। আর রেজিস্ট্রেশন করা হয় ভোলা জেলার বিআরটিএ থেকে। বিলাসবহুল রেঞ্জ রোভার মডেলের গাড়িটি ব্যবহার করছিলেন আলোচিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের।

আনুমানিক চার কোটি টাকা মূল্যের এই গাড়ি আজ মঙ্গলবার বিকেলে ধানমন্ডির একটি বাড়ি থেকে আটক করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। কিন্তু আটক নিয়ে দিনভর চলে নাটকীয়তা। বেশ কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করানো হয় গাড়িটির। কয়েক ঘণ্টা খোঁজখবর করে গাড়িটি জব্দ করা হয় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে।

বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের ব্যবহার করা কালো রেঞ্জ রোভার এই গাড়িটি আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। ছবি: সংগৃহীত
বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরের ব্যবহার করা কালো রেঞ্জ রোভার এই গাড়িটি আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। ছবি: সংগৃহীত

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান প্রথম আলোকে বলেন, মুসা বিন শমসেরকে গাড়ি হস্তান্তর করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয় আজ সকাল আটটায়। তাঁর গুলশান ২ নম্বরের ১০৪ নম্বর সড়কের ৫এ/বি নম্বর বাড়িতে রাখা ছিল। কিন্তু শুল্ক গোয়েন্দার উপস্থিতি টের পেয়ে সকালে গাড়িটি অন্য জায়গায় সরিয়ে ফেলেন তিনি। এটি ওই বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে পাওয়া যায়। গাড়িটি প্রথমে পাঠানো হয় ধানমন্ডিতে বসবাসকারী মুসার এক আত্মীয়র বাসায়। এর আগে ওই গাড়িতে করে সকাল সাড়ে ছয়টায় মুসার নাতিকে ধানমন্ডির সানবিম স্কুলে পাঠানো হয়। তবে স্কুল ছুটির সময় বেলা দুইটার দিকে আরেকটি গাড়িতে করে ওই নাতিকে গুলশানের বাড়িতে আনা হয়। রেঞ্জ রোভার গাড়িটি থাকে ধানমন্ডির বাড়িতে। প্রায় সাত ঘণ্টা পর ধানমন্ডির বাড়ি থেকে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শুল্ক গোয়েন্দারা গাড়িটি উদ্ধার করেন।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গাড়িটি ভুয়া আমদানি দলিলাদি দিয়ে (ভোলা ঘ ১১-০০-৩৫ হিসেবে) রেজিস্ট্রেশন নেওয়া হয়েছিল। কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের বিল অব এন্ট্রি-১০৪৫৯১১, তারিখ ১৩/১২/২০১১-এ ১৩০% শুল্ক প্রদান করে ভোলা থেকে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। কাস্টম হাউসের নথি যাচাই করে এই বিল অব এন্ট্রি ভুয়া হিসেবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। পাবনার ফারুকুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রেশন হওয়া গাড়িটি মুসা বিন শমসের ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করতেন। এখন শুল্ক আইন ও মানি লন্ডারিং আইনে তদন্ত শেষে মামলা ও পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন :-