পরীক্ষার্থীদের প্রায় সবাই পাস

পরীক্ষায় এসেছে কাঙ্ক্ষিত ফল। শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস তাই বাঁধনহারা। ছবিটি ঢাকার মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ থেকে তোলা। প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গতবারের মতো এবারও সেরা সাফল্য অর্জন করেছে। শতভাগ পাসের পাশাপাশি জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬১৪ জন । সাবিনা ইয়াসমিন
পরীক্ষায় এসেছে কাঙ্ক্ষিত ফল। শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস তাই বাঁধনহারা। ছবিটি ঢাকার মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ থেকে তোলা। প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গতবারের মতো এবারও সেরা সাফল্য অর্জন করেছে। শতভাগ পাসের পাশাপাশি জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬১৪ জন । সাবিনা ইয়াসমিন
কুমিল্লা মডার্ন স্কুলের ৫২০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। আর জাতীয়ভাবে স্কুলটি সপ্তম হয়েছে । এম সাদেক
কুমিল্লা মডার্ন স্কুলের ৫২০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। আর জাতীয়ভাবে স্কুলটি সপ্তম হয়েছে । এম সাদেক

দেশের সবচেয়ে বড় পাবলিক পরীক্ষা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে এবার নতুন ইতিহাস রচনা করল শিশু শিক্ষার্থীরা। পঞ্চম শ্রেণী শেষে অনুষ্ঠিত ওই পরীক্ষায় এবার প্রায় সব শিশুই পাস করেছে। পাসের হার ৯৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যায়ও নতুন মাইলফলক তৈরি হয়েছে। এবার দুই লাখ ৪০ হাজার ৯৬১ জন শিশু জিপিএ-৫ পেয়েছে।
গতকাল সোমবার এই ফল প্রকাশ করা হয়। এই পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ছিল। যদিও মন্ত্রণালয় বলেছে, আংশিক প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে মাত্র চার জেলায়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের এই মতের সঙ্গে একমত হতে পারেননি শিক্ষাসংশ্লিষ্ট অনেকে।
অন্যদিকে বরগুনার আমতলী উপজেলার ফল স্থগিতের কথা জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তবে এই উপজেলার ফল আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে।
দুপুর সাড়ে ১২টায় সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রী। এর আগে সকাল ১০টায় তাঁর নেতৃত্বে মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন।
এবার চরম রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশে কয়েক দফায় পরীক্ষা পিছিয়েছে। গত ২০ নভেম্বর পরীক্ষা শুরু হয়ে ২৮ নভেম্বর শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু তা শেষ হয় ৬ ডিসেম্বর। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ২৪ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ করা হলো।
এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার জন্য তালিকাভুক্ত হয় ২৬ লাখ ৩৯ হাজার ৪৫ জন ছাত্রছাত্রী। তবে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৫ লাখ ১৯ হাজার ৩২ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ২৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৪২ জন। এর মধ্যে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ পরীক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পেয়েছে। গতবারের চেয়ে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১০ হাজার ৭৪১ জন।

সিলেট বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছে সিলেট সদরের ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির ২২৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে । ছবি: আনিস মাহমুদ
সিলেট বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছে সিলেট সদরের ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির ২২৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে । ছবি: আনিস মাহমুদ

মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পরীক্ষার প্রতিটি সূচকেই অগ্রগতি হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই সবাই পাস করুক। ফেল তো দুর্ঘটনা মাত্র।’ এবার পাসের হারের দিক দিয়ে ছেলে ও মেয়েরা প্রায় সমান। এর মধ্যে ছাত্রদের পাসের হার ৯৮ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাসের হার ৯৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। তবে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এবারও ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে।
গতবারের মতো এবারও প্রাথমিকে সাত বিভাগে পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে বরিশাল বিভাগ। এই বিভাগে পাসের হার ৯৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া ঢাকায় ৯৮ দশমিক ৭০, রাজশাহীতে ৯৮ দশমিক ৫৪, খুলনায় ৯৯ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৯৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ, রংপুরে ৯৮ দশমিক ৩৮ ও সিলেট বিভাগে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
পাসের হারের দিক দিয়ে সবচেয়ে খারাপ করেছে সিলেট। এই জেলায় পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। জেলার মধ্যে শীর্ষে আছে যশোর ও লালমনিরহাট।
জিপিএ-৫ এবং পাসের হারের ভিত্তিতে দেশের স্কুলগুলোর মধ্যে এবারও সেরা হয়েছে রাজধানীর মণিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ। আগের মতো দ্বিতীয় স্থানে আছে মতিঝিল থানার অধীন ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল। তৃতীয় স্থান দখল করেছে রাজধানীর মাইলস্টোন প্রিপারেটরি কেজি স্কুল।
পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই লাখ ৪০ হাজার ৯৬১ শিশু। জিপিএ ৪ থেকে ৫-এর নিচে পেয়েছে সাত লাখ ৯২ হাজার ৯১১।

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফল
ঢাকা
পাসের হার
৯৮.৭০%
জিপিএ-৫
১,০৫,৬৪৬

চট্টগ্রাম
পাসের হার
৯৮.৭৯%
জিপিএ-৫
৩৮,৪৪১

রাজশাহী
পাসের হার
৯৮.৫৪%
জিপিএ-৫
২৬,৬৬৩

খুলনা
পাসের হার
৯৯.০০%
জিপিএ-৫
২৩,৫৯৪

সিলেট
পাসের হার
৯৬.৫৪%
জিপিএ-৫
৬,১৯৬

বরিশাল
পাসের হার
৯৯.২৫%
জিপিএ-৫
১১,৭৫৯

রংপুর
পাসের হার
৯৮.৩৮%
জিপিএ-৫
২৮,৬৬২