মৎস্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা, হরতালের ডাক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আগামী রোববার। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক সেখানে গিয়ে হাসপাতাল উদ্বোধন করবেন। তবে ওই অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ রোববার বিজয়নগরে হরতালের ডাক দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ভূঁইয়া। তিনি বলেন, মন্ত্রী ছায়েদুল হক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে না নিয়ে এলে তা বর্জন করা হবে।

তানভীর ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘হাসপাতাল উদ্বোধনের জন্য মন্ত্রী ছায়েদুল হকের অফিশিয়াল সফরসূচি আমরা পাইনি। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগও মন্ত্রীর সফরসূচি সম্পর্কে কিছু জানে না। সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোকতাদির চৌধুরীর সঙ্গে পরামর্শ করে মন্ত্রী ছায়েদুল হকের সফরসূচি স্থগিত করতে হবে।

এ পরিস্থিতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাংসদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকের বিরোধ আবারও সামনে চলে এল। মাসখানেক আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে জেলা আওয়ামী লীগের মূল অংশকে ছাড়াই ছায়েদুল হককে প্রধান অতিথি করে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তাঁর সমর্থকেরা। বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পক্ষের সমর্থক।

নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই মূলত জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মন্ত্রীর বিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বিরোধ আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে অংশ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন শফিকুল আলম। মূলত তিনি মৎস্যমন্ত্রীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

গত ২৩ মার্চ মন্ত্রীকে প্রধান অতিথি করে শফিকুল আলমের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজনে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আমানুল হক, সাবেক মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তাজ মো. ইয়াছিন। ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ছায়েদুল হকসহ অন্য অতিথিরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করেন। পরে শহরের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে গণহত্যা দিবসের অনুষ্ঠানে মৎস্যমন্ত্রী ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সমালোচনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক ভূইয়া বলেন, ছায়েদুল হক জেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের না জানিয়ে সুধী সমাবেশ ও বিভিন্ন কার্যালয় উদ্বোধন করছেন। তাই উপজেলা আওয়ামী লীগ রোববার হরতাল ডেকেছে।

বিজয়নগরের ইউএনও) আখতারুন্নেছা শিউলি বলেন, ‘গতকাল মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রী মহোদয়ের অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে একটি চিঠি হাতে এসেছে। সেখানে রোববার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল উদ্বোধন ও বিকেল চারটায় উপজেলার চান্দুরা এলাকায় সুধী সমাবেশের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’