রকিবুল হুদার নির্দেশে সেদিন গুলি করা হয়েছিল

চট্টগ্রাম নগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদার নির্দেশে পুলিশ ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে গুলি চালিয়েছিল। ওই ঘটনায় নিহত স্বপন কুমার বিশ্বাসের বড় ভাই অশোক বিশ্বাস এবং আহত আবু সৈয়দ গতকাল রোববার চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মীর রুহুল আমিনের আদালতে সাক্ষ্যদানকালে তাঁরা এ কথা বলেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সাক্ষী অশোক বিশ্বাস আদালতকে বলেন, তাঁর ছোট ভাই স্বপন তখন উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র ছিল। তাঁদের জামালখানের বাসা থেকে বের হওয়ার সময় স্বপনকে অশোক জিজ্ঞেস করেছিলেন কোথায় যাচ্ছে। তখন স্বপন শেখ হাসিনার জনসভায় যাচ্ছে বলে তাঁকে জানায়। জনসভায় গুলি হওয়ার খবর শুনে স্বপনকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে পাননি তিনি। পরদিন সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভাইয়ের লাশ পাওয়া যায়।

আইনজীবী মেজবাহ বলেন, আদালতে অশোক জানান, রকিবুল হুদার নির্দেশে পুলিশ ওই দিন গুলি চালায়। রকিবুল হুদা গুলির নির্দেশদাতা ছিলেন বলে আদালতকে জানান আবু সৈয়দও।

১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে জনসভায় যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। এতে ২৪ জন নিহত হন। এ ঘটনা পরে চট্টগ্রাম গণহত্যা নামে পরিচিতি পায়।

কলেজশিক্ষক আবু সৈয়দ আদালতকে বলেন, জনসভায় যাওয়ার জন্য তিনি নিউমার্কেট এলাকায় যান। জিপিও ভবন পার হওয়ার সময় কোতোয়ালি মোড়ের দিক থেকে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। জনসভার দিকে যেতে না পেরে আবু সৈয়দ তখন ফিরে আসেন। নিউমার্কেট এলাকায় সাইকেল পার্টসের দোকানের সামনে দাঁড়ান। সেখান থেকে তাঁকে ধরে পুলিশ বেদম মারধর করে।

আবু সৈয়দ আদালতকে বলেন,  মারধরের এক পর্যায়ে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ার পর পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়। আহত অবস্থায় তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নেন। কিন্তু পুলিশের পিটুনিতে আহত হওয়ায় হাসপাতাল থেকে কোনো সনদ দেয়নি
বলে আদালতকে বলেন আবু সৈয়দ।

আগামী ২২ জুন আদালত মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।