রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কাল পতিসরে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী কাল সোমবার। এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে নওগাঁর পতিসরে। সোমবার বেলা আড়াইটায় পতিসরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির দেবেন্দ্র মঞ্চে জন্মবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা। রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক ও নওগাঁ-৬ (রানীনগর-আত্রাই) আসনের সাংসদ ইসরাফিল আলম।
এবার বিশ্বকবির ১৫৬তম জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মানুষের ধর্ম: রবীন্দ্রনাথ ও সমকালীন মানসিকতা’। এ বিষয়ে অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তব্য দেবেন হায়াৎ মামুদ।
রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি, কবির হাতে গড়া রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন, কুঠিবাড়ি চত্বর, দেবেন্দ্র মঞ্চসহ পুরো পতিসর এলাকার ধোয়ামোছার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সংস্কার করা হয়েছে পতিসরে যাওয়ার রাস্তাঘাট।
জেলা প্রশাসক আমিনুর রহমান বলেন, ‘১৯৯৩ সাল থেকে পতিসরে রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী ২৫ বৈশাখ উদ্যাপিত হয়ে আসছে। এবারই প্রথম পতিসরে কোনো রাষ্ট্রপতি আসছেন। আশা করছি, এবারের অনুষ্ঠান অনেক প্রাণবন্ত হবে।’
রবীন্দ্র স্মৃতি সংগ্রাহক ও রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশনের সভাপতি এম মতিউর রহমান বলেন, ‘কবির আগমনে পতিসর আজ ধন্য। তাঁরই স্মৃতি হিসেবে এখানে গড়ে উঠেছে স্থাপনা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা রবীন্দ্র স্মৃতি সংগ্রহ করে সেগুলো পতিসরে সংরক্ষণের প্রয়াস চালাচ্ছি। রবীন্দ্রনাথ এ এলাকার কৃষকদের জন্য অনেক করে গেছেন। এখানকার কৃষকদের কল্যাণে রবীন্দ্রনাথ এখানে কৃষি ব্যাংক চালু করেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, চাষ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য উপমহাদেশের মধ্যে এই পতিসরে প্রথম কলের লাঙল দিয়ে মাটি চাষ শুরু করেছিলেন কবিগুরু। তাঁর কর্মের প্রতি সম্মান জানিয়ে এখানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিত। আশা করছি, মহামান্য রাষ্ট্রপতি সেই ঘোষণা দিয়ে নওগাঁবাসীকে কবিগুরুর জন্মবার্ষিকীর উপহার দিয়ে যাবেন।’
উত্তরাধিকার সূত্রে জমিদারির ভাগ পেয়ে রবীন্দ্রনাথ পতিসরে অনেকবার এসেছিলেন। তবে কবিগুরু পতিসরে প্রথম এসেছিলেন ১৮৯০ সালে। শেষ বিদায় ১৯৩৭ সালে। জমিদারি দেখাশোনার জন্য এলেও প্রকৃতি ও মানমপ্রেমী কবি অবহেলিত পতিসর এলাকার মানুষদের জন্য অনেক জনহিতৈষী কাজ করে গেছেন। পতিসরে রবীন্দ্রনাথের কর্মযজ্ঞের অনেক স্মৃতি কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেলেও এখনো পতিসর রবীন্দ্র জাদুঘর ও রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশনে বেশ কিছু স্মৃতি রয়েছে।