অস্ত্রোপচারের ২৬ ঘণ্টা পর পরীক্ষা দিলেন মা

আলেয়া আক্তার
আলেয়া আক্তার

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় একজন শিক্ষার্থী অস্ত্রোপচার করে মা হওয়ার ২৬ ঘণ্টা পরই পরীক্ষায় বসেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক (পাস) প্রথম পর্বের পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।

ওই পরীক্ষার্থীর নাম আলেয়া আক্তার। তিনি সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী। তিনি সরকারি মুজিব কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাঁর স্বামীর নাম আলতাফ হোসেন। তাঁর বাড়ি সখীপুরের পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার সামালিয়া গ্রামে।

আলেয়া আক্তার পরীক্ষা শেষ করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (আবশ্যিক) বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। প্রথমে চিন্তা করেছিলাম কিছু লিখে চলে আসব। কিন্তু পরে তেমন অসুবিধা হয়নি। তাই পুরো পরীক্ষা দিয়েছি। প্রশ্নের ৯০ ভাগ উত্তর করেছি। পরীক্ষা চলাকালীন ব্যথা অনুভব করেছি, কিন্তু পাত্তা দিইনি। মাঝে মাঝে আমার বাচ্চাটার খবর নিয়েছি।’

কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষায় থাকা আলেয়ার স্বামী আলতাফ হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালে শাশুড়ি বাচ্চার দেখভাল করছেন।’

আলেয়ার মা রহিমা বেগম বলেন, ‘রোববার রাতে ব্যথা অনুভব করলে মেয়েকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সোমবার দুপুর ১২টায় অস্ত্রোপচার করা হয় এবং ছেলেসন্তানের জন্ম হয়।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচারকারী দলের সদস্য অবেদনবিদ শাহীনুর আলম বলেন, ‘অপারেশনের পর কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আমরা রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখি। আলেয়া খুবই সাহসী ও আত্মপ্রত্যয়ী মেয়ে। অনেকে ২-৩ দিন বিছানা থেকে উঠতেই পারেন না, তিনি পেরেছেন।’

সরকারি মুজিব কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্য মানিক লাল ভৌমিক বলেন, ‘মেয়েটির অসুবিধার কথা ভেবে আলাদা কক্ষ বরাদ্দ দিয়েছিলাম। কিন্তু মেয়েটি বলেছে আমি সাধারণ পরীক্ষার্থীদের সঙ্গেই পরীক্ষা দিতে আগ্রহী।’