সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকারীদের বিচার চায় টিআইবি

গত কয়েক দিনে দিনাজপুর, যশোর, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দ্রুত এ ধরনের হামলা বন্ধে কার্যকর প্রশাসনিক ও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ, ঘটনার বিচারিক তদন্ত এবং দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার সুযোগে দৃশ্যত পরিকল্পিতভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর এবং তাদের ধর্মীয় স্থাপনায় আক্রমণের যে ঘটনা ঘটেছে, তা মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিকৃষ্টতম উদাহরণ। সংখ্যালঘুদের ওপর এরূপ বর্বরতা ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অগ্রহণযোগ্য ও অমার্জনীয় আঘাত।’

ইফতেখার আরও বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বক্ষণিক উপস্থিতি সত্ত্বেও সংখ্যালঘুদের ওপর এরূপ সহিংসতার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কারণ, ২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর সময়ে রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় যেভাবে পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করা হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এ বর্বরতা প্রতিরোধ করা যেত।’

প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব এখনই দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এ নৃশংসতা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক অবিলম্বে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি জোর দাবি জানান। একই সঙ্গে মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী এসব সহিংসতায় যারা সম্পৃক্ত ও যারা দায়িত্বে অবহেলা করেছে, তাদের বিশেষ বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুষ্ঠু, প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক দ্রুততম সময়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানায় টিআইবি। বিবৃতিতে ক্ষতিগ্রস্তদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে পরিপূর্ণ ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।