সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ

মানিকগঞ্জ সদরের সাব-রেজিস্ট্রার অহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বাসিন্দা আতাহার আলী খান (বীর প্রতীক) দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) নিবন্ধন পরিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, জেলা রেজিস্ট্রার ও জেলা প্রশাসকের কাছে অহিদুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভাড়াই ভিকরা গ্রামের বাসিন্দা আতাহার আলী স্থানীয় একটি কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি উপজেলার বড় বড়িয়াল মৌজার ৩৪ শতক জমি ওই কবরস্থানের নামে মৌখিকভাবে দান করেন। গত ১৮ এপ্রিল ওই জমি কবরস্থানের নামে রেজিস্ট্রি করতে আতাহারসহ গ্রামের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তি সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে যান। এরপর একজন দলিল লেখকের কাছ থেকে বিধি অনুযায়ী একটি ঘোষণাপত্র দলিল সম্পাদন করা হয়। এরপর তাঁরা রেজিস্ট্রির জন্য সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে গেলে তিনি টালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে দলিল রেজিস্ট্রির জন্য ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন তিনি। ঘুষ না দিলে ওই জমির দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রির আগে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা সরকারি ফি জমা দিতে বলেন তিনি।
আতাহার আলী খান বলেন, গত বছরের ২৭ জুলাই সাব-রেজিস্ট্রার ৪০৩৮ ও ৪০৩৯ নম্বরের দুটি ঘোষণাপত্র দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন। এ বিষয়টি তাঁকে অবহিত করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর রেজিস্ট্রি না করে দলিলটি তাঁকে ফিরিয়ে দেন।
আতাহার আলী বলেন, ‘ঘুষের বিনিময়ে তিনি বেশ কয়েকটি ঘোষণাপত্র দলিল রেজিস্ট্রি করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি রাজস্বের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে তিনি বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি।’
মানিকগঞ্জ বারের আইনজীবী মহিউদ্দিন স্বপন বলেন, সদর সাব-রেজিস্ট্রার দলিল রেজিস্ট্রির জন্য সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকেন। ঘুষ দাবির বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত থেকে আইনগত নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, নিবন্ধন পরিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, জেলা রেজিস্ট্রার ও অভিযুক্ত সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে ওই নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন খান। তিনি বলেন, ঘুষ দাবির বিষয়ে অহিদুলের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে তার জবাব দিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অহিদুল। গতকাল বুধবার মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘এ অভিযোগ সত্য নয়। দলিল সম্পাদনে ভুল ছিল। পরে তা সংশোধনও করা হয়েছে। আগামী রোববার দলিলটি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হবে। মসজিদ-মাদ্রাসা ও কবরস্থানের জন্য আমরা আরও সহযোগিতা করি।’
জেলা রেজিস্ট্রার মো. শাহাদাৎ হোসেন ভূঞা বলেন, সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার তাঁর নেই। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার এখতিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের।