রমনা পার্কে এক বিদেশি গাছ

ফুলসহ ফিডেলউড ট্রি। রমনা পার্ক থেকে তোলা l ছবি: লেখক
ফুলসহ ফিডেলউড ট্রি। রমনা পার্ক থেকে তোলা l ছবি: লেখক

কয়েক বছর আগে ফুল ফোটার পর গাছটি শনাক্ত করতে পারি। এটি ক্যারিবীয় (গায়ানা, সুরিনাম, ত্রিনিদাদ, বাহাম, কিউবা), দক্ষিণ আমেরিকা ও আমেরিকার ফ্লোরিডা এলাকার প্রাকৃতিক বনের গাছ। রমনা পার্কে মাত্র একটি গাছ আছে। কে লাগিয়েছেন সে তথ্য জানা যায়নি। এ গাছের বৈজ্ঞানিক নাম citharexylum spinosum। পরিবার Verbenaceae। ইংরেজি নাম ফিডেলউড ট্রি, স্পাইনি ফিডেলউড ট্রি। বাংলা নাম দেওয়া হয়নি। শিগগিরই দেওয়া হবে বলে আশা করি।

পত্রঝরা গাছ। গাছ প্রায় ১৫ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। পাতার দৈর্ঘ্য ৪-২০ সেন্টিমিটার হয়। প্রাকৃতিক আবাসে প্রায় সারা বছরই ফুল ফোটে। তবে ঢাকার রমনা পার্কের গাছটিতে ফুল আসে গ্রীষ্মে এবং থাকে প্রায় পুরো বর্ষা পেরিয়ে শরৎ পর্যন্ত। লম্বা ঝুলন্ত মঞ্জরিতে সাদা ফুল। ফুল সুগন্ধি। গাছের বয়স দশ বছর হলে ফল ধরা শুরু হয়। শীতে পাতা সবুজ থেকে লালচে রং ধারণ করে এবং ঝরে পড়ে। বসন্তে নতুন পাতা গজায়। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বেশ ভালোভাবেই টিকে গেছে।

ফিডেলউড ট্রির বৃদ্ধি দ্রুত হয়। তবে পর্যাপ্ত রোদের  আলোর পাশাপাশি হালকা ছায়া দরকার। 

আদি আবাসের অধিবাসীরা গাছটির বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে থাকে নানান কাজে, বিশেষ করে কাঠ, খাদ্য আর ওষুধের জন্য।  বাদ্যযন্ত্র  তৈরি করতে অধিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া কাঠ ঘরের দরজা, জানালা ও বিম তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।  কোনো কোনো আদিবাসী এটির ফল ও ফুল খেয়ে থাকেন। গাছের বাকল ঠান্ডা নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়।

শোভাবর্ধনকারী গাছ হিসেবেও এটা মানানসই। গাছের ক্রাউনের (ডালপালাসহ পাতা) বিন্যাস চারদিকে প্রায় সমান থাকে এবং অগ্রভাগ কিছুটা দেবদারু আদলের। বীজ দ্বারা বংশবৃদ্ধি হয়।