সুন্দরবনের আগুন নিভেছে

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ক্যাম্প-সংলগ্ন এলাকায় গত বুধবার সকালে লাগা আগুন বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে নেভানো সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যেই বনের প্রায় সাড়ে আট একর জায়গা পুড়ে গেছে। তবে কোনো বন্য প্রাণীর ক্ষতি হয়নি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে বনে আগুন লাগার কথা কিছু বনজীবীর মাধ্যমে জেনে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস বুধবার দুপুর থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। স্থানীয় এলাকাবাসীও আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করেন। বুধবার রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন জায়গায় ধোঁয়া দেখা যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস সেসব জায়গা পানি দিয়ে সম্পূর্ণভাবে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
চাঁদপাই রেঞ্জের কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘এবারের লাগা আগুনে বনের প্রায় সাড়ে আট একর জায়গা পুড়ে গেছে। তবে এ স্থানে বড় কোনো গাছ না থাকায় ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে। এ স্থানটি মূলত নলবন। তবে আগুনে বন্য প্রাণীর কোনো ক্ষতি হয়নি। এ ঘটনায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে বুধবার রাতেই শরণখোলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।’
গত ২৭ মার্চ রাতে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন-সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তাতে প্রায় দেড় একর বনভূমির গাছপালা পুড়ে যায়। এর আগে ২০১৪ সালের ২২ মে একই এলাকায় প্রায় ১ একর জায়গা জুড়ে থাকা বলাবাগানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
একই স্থানে বারবার আগুন লাগছে কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বনের এই এলাকা লোকালয়ের কাছে। লোকালয় থেকে গরু ছাগল বনে চলে গেলে স্থানীয় জনগণ বনে প্রবেশ করে। তা ছাড়া সুন্দরবনের বিভিন্ন মৌসুম যেমন গোলপাতা আহরণ মৌসুম, মধু আহরণ মৌসুম, শুঁটকি মৌসুমসহ বিভিন্ন সময়ে তাদের যাতায়াতটা অনেক বেশি। ফলে তাদের বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেই আগুন লাগার একটা বড় কারণ বলে আমরা মনে করছি। এ জন্য আমরা সুন্দরবনে সাধারণ লোকজনের চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর বনের এ এলাকায় আমরা সার্বক্ষণিক চারজন ফায়ার ওয়াচার নিয়োগ করেছি।’ তিনি আরও জানান, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি আগামী ১৪ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।