অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে অনীহা!

ঈদ উপলক্ষে সদরঘাট থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে অগ্রিম টিকিট বিক্রি ১৫ জুন থেকে শুরুর কথা। ফাইল ছবি
ঈদ উপলক্ষে সদরঘাট থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে অগ্রিম টিকিট বিক্রি ১৫ জুন থেকে শুরুর কথা। ফাইল ছবি

সদরঘাট নদীবন্দরে ৩৫টি লঞ্চ কোম্পানির কাউন্টার আছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই কাউন্টারগুলোর ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কথা। কিন্তু দুপুর ১২টা নাগাদ মাত্র ছয়টি লঞ্চ কোম্পানির কাউন্টার খুলতে দেখা গেছে।

ঈদ উপলক্ষে সদরঘাট থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে লঞ্চ মালিকদের অনীহা আছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিভিন্ন লঞ্চ কোম্পানির একাধিক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করে বলেন, ঈদ উপলক্ষে আগেই ভিআইপি এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিন বুক হয়ে যায়। এ কারণে লঞ্চ মালিকেরা অগ্রিম টিকিট বিক্রি করতে আগ্রহী হন না।

বরগুনার আমতলী যাওয়ার জন্য অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে আজ সকালে সদরঘাট নদীবন্দরের লঞ্চ কাউন্টারে আসেন ইব্রাহিম মিয়া। কিন্তু তাঁর রুটের লঞ্চের কাউন্টার বন্ধ দেখতে পান তিনি। ইব্রাহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অগ্রিম টিকিট বিক্রির কথা বলা হলো। কষ্ট করে এসেছি। এখন দেখি কাউন্টার বন্ধ। কারণটা কী? এসব ক্ষেত্রে আগেই টিকিট বুক হয়ে যায় বলে শুনছি।’

অগ্রিম টিকিট বিক্রি নিয়ে মেসার্স ফারহান কোম্পানির টিপু লঞ্চের কর্মচারী মো. হৃদয়ের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ২৩ ও ২৪ জুনের কোনো টিকিট নেই। সব বুকিং হয়ে গেছে।

অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল সংস্থার (যাত্রী পরিবহন) কার্যকরী সদস্য মেসার্স ভূঁইয়া ট্রান্সপোর্টের মালিক সিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, অগ্রিম টিকিট বিক্রির আজ প্রথম দিন। তাই হয়তো কাউন্টার খুলতে দেরি হচ্ছে। তবে সব কটি কাউন্টার খোলার ব্যাপারে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে নির্দেশ রয়েছে।

সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সদরঘাট নদীবন্দরে চারটি কোম্পানির কাউন্টার খুলতে দেখা যায়। তার মধ্যে একটি মেসার্স ডলার শিপিং লাইনসের এমভি মর্নিং সান লঞ্চের কাউন্টার। সেখানকার সুপারভাইজর আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ১০টায় তাঁরা কাউন্টার খুলেছেন। আধা ঘণ্টায় একটি টিকিট বিক্রি হয়েছে।

দুপুর ১২টার দিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খোলা থাকা ছয়টি লঞ্চ কোম্পানির কাউন্টার থেকে মোট ২৭টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে।

জানতে চাইলে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, আজ থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রির জন্য ৩৫টি লঞ্চ কোম্পানিকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা কাউন্টার না খুললে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১১ জুন ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল মিলনায়তনে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগ আয়োজিত সমন্বয় সভা হয়। সেই সভায় ১৫ জুন সকাল থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় জানানো হয়, ১৫ জুন সকাল থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের কাউন্টার থেকে ভিআইপি এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিনের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করা যাবে।

সদরঘাট টার্মিনাল সূত্রে জানা যায়, নদীপথে যাত্রী নিয়ে প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে শতাধিক বেসরকারি লঞ্চ চলাচল করে। এসব লঞ্চে প্রায় ১০ হাজার ভিআইপি, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিন আছে।