বিকল্প সড়ক ডুবে যান চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ফেরিঘাট-ধারিয়ারচর-হোমনা সড়কের কল্যাণপুরে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বিকল্প সড়ক ডুবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ঠিকাদার বিকল্প সড়কটি উঁচু করে নির্মাণ না করায় এটি বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। তা ছাড়া এলজিইডির লোকজনও বিষয়টি যথাযথভাবে দেখভাল করেনি। এ কারণে এখন এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।

 স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বাঞ্ছারামপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়কের বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের পশ্চিম প্রান্তে ২০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করছে এলজিইডি। গত জানুয়ারি মাসে এ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে মেসার্স লোকমান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতু নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩৪ লাখ টাকা। এ সড়কটি ব্যবহার করে প্রতিদিন পিকআপ, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ তিন শতাধিক যানবাহন চলাচল করে। প্রতিদিন এ সড়কটি প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে।

সরেজমিনে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে কল্যাণপুর এলাকায় দেখা গেছে, নির্মাণাধীন সেতুতে কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। সেতুর উত্তর পাশে ফসলি জমিতে কিছু ইটের খোয়া ফেলে বিকল্প সড়ক নির্মাণ করেন ঠিকাদার। সেই বিকল্প সড়ক গত বুধবার বিকেলে বৃষ্টির পানিতে ডুবে যায় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বিকল্প সড়কটি জমির সমান উঁচু হওয়ায় তা অল্প বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পথচারীরা হাঁটুপানি মাড়িয়ে যাতায়াত করছেন। এটি ডুবে যাওয়ায় এই সড়কে চলাচলকারী যানবাহন ১০ কিলোমিটার ঘুরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদর দিয়ে চলাচল করছে। সড়কের ওপর প্রায় ১৮-২০ ইঞ্চি পানি। রাস্তাটি আরও ৩ ফুট উঁচু হলে মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।

এ বিষয়ে কল্যাণপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মো. শামিম মিয়া বলেন, অতি বৃষ্টিতে বিকল্প রাস্তায় কয়েক দিন ধরেই পানি ছুঁইছুঁই করছে। ঠিকাদার কিংবা কর্তৃপক্ষ নজর না দেওয়ায় বিকল্প রাস্তা ডুবে গেছে। তা ছাড়া ঠিকাদার শুরু থেকেই বিকল্প রাস্তাটি যেনতেনভাবে তৈরি করেছেন। 

অটোরিকশাচালক হেলাল মিয়া বলেন, কল্যাণপুরে বিকল্প সড়ক ডুবে যাওয়ায় ফেরিঘাট থেকে ধারিয়ারচর-কল্যাণপুর হয়ে হোমনা যাওয়া যাচ্ছে না। প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদর হয়ে যাতায়াত করতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে হচ্ছে।

অটোরিকশার যাত্রী সুমন মিয়া বলেন, ‘আগে ফেরিঘাট থেকে হোমনা যেতে ৭০ টাকা ভাড়া লাগত। এখন বিকল্প রাস্তা ডুবে থাকায় ঘুইরা যেতে ১০০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছে; সময়ও বেশি লাগছে।’

উপজেলা প্রকৌশলী এ বি এম খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমি শুনেছি কল্যাণপুরে নির্মাণাধীন সেতুর পাশের বিকল্প সড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। এতে সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আমি ঠিকাদারের সঙ্গে রাগারাগি করেছি, কেন আগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাঁশের সাঁকো তৈরি করে আপাতত মানুষ পারাপারের ব্যবস্থা করছি। তবে তা করতেও অন্তত দুই দিন সময় লাগবে।’

গাফিলতির অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লোকমান এন্টারপ্রাইজের মালিক লোকমান হোসেনের মুঠোফোনে তিনবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।