পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও লুটপাটের অভিযোগ

নোয়াখালীর কবিরহাট থানার এক সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক দল যুবককে নিয়ে প্রবাসীর বাড়িতে চাঁদা দাবি ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার ওই প্রবাসীর স্ত্রী আমেনা বেগম জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে এ–সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

গত ২৫ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

পুলিশ সুপারের কাছে দেওয়া অভিযোগে আমেনা বেগম উল্লেখ করেন, গত রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটা থেকে তিনটার দিকে একই এলাকার কয়েকজন যুবককে সঙ্গে নিয়ে কবিরহাট থানার এএসআই জয়নাল আবেদীন, দুই কনস্টেবল মো. জালাল উদ্দিন ও আলমগীর হোসেন তাঁর বাটইয়া ইউনিয়নের আশ্রাফপুর গ্রামের বাড়িতে যান। তাঁরা এ সময় আমেনা বেগমের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় তিনি যাতে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন সে জন্য তাঁর হাত থেকে মুঠোফোনও কেড়ে নেন।

আমেনা বেগম অভিযোগ উল্লেখ করেন, পুলিশ ও সঙ্গে থাকা যুবকেরা তাঁর হাত থেকে চাবি কেড়ে নিয়ে আলমারি খুলে নগদ ১৭ হাজার টাকা ও দেড় ভরি ওজনের সোনার গয়না নিয়ে যায়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এ সময় তাঁর ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে ঘরের বাইরে বাগানে ছুড়ে ফেলে দেন। একপর্যায়ে তিনি কনস্টেবল আলমগীরের হাত থেকে মুঠোফোন নিয়ে তাঁর ভাই আবদুল ওদুদকে ফোন করলে পুলিশ সদস্য ও সঙ্গে আসা যুবকেরা ঘর থেকে বের হয়ে যান। যাওয়ার সময় তাঁরা ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন।

অভিযোগে বলা হয়, পরদিন সকালে ঘটনাটি স্থানীয় বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ আশপাশের লোকজনকে জানানো হয়। একই দিন বিষয়টি কবিরহাট থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও (ওসি) অবহিত করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে আমেনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, কবিরহাট থানায় গত ২৭ জুন মৌখিকভাবে অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেওয়ায় তিনি গতকাল নোয়াখালীর পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরহাট থানার এএসআই জয়নাল আবেদীন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা রাতে ওই এলাকায় টহলে ছিলেন। এলাকার কিছু যুবক আমেনা বেগমের বাড়ির কাছে ঘোরাফেরা করছিলেন। তাঁরা বাড়ির ভেতর গিয়ে ওই ছেলেদের সরিয়ে দেন। কিন্তু বাড়ি ভেতরে প্রবেশ করেননি। যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটি ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মো. হাছান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধ অভিযোগের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এটি তদন্ত করে দেখা হবে।

এদিকে প্রবাসীর স্ত্রী আমেনা বেগমের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম। মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ওসির সঙ্গে কথা বলার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।