চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. কাউসার আলীর বিরুদ্ধে মাদক সেবন, পরিষদের টাকা আত্মসাৎ ও বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিভিন্ন অপকর্ম ও অনিয়ম-দুর্নীতি তুলে ধরে ওই ইউপির ১১ সদস্য জেলা প্রশাসকের কাছে গত রোববার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়, ইউপি চেয়ারম্যান কাউসার ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে লাইসেন্সধারীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা হারে আদায় করে সরকারি খাতে ১০০ টাকা জমা দেখান। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এডিপি প্রকল্প থেকে ওই ইউনিয়নের জন্য ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের মতামত না নিয়ে বিভিন্ন মনগড়া প্রকল্প দেখিয়ে ওই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন। গত অর্থবছরে উপজেলা পরিষদ থেকে পাওয়া ১%-এর দেড় লাখ টাকা তিনি কোনো কাজে না লাগিয়েই আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া ইউনিয়নের নয়াদীঘি পুকুর নিলামের ইজারার ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ৩০ হাজার টাকা, ইউনিয়নে হোল্ডিং কর খাতে আয়ের ৬০ হাজার টাকা, একই অর্থবছরে পরিষদের আয়ের ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৪৫ টাকা আত্মসাৎ করেন। সরকারের গম সংগ্রহ অভিযানের সময় ইউনিয়নের গমচাষিদের কাছ থেকে নেওয়ার জন্য ২৫ মেট্রিক টনের বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান ওই বরাদ্দের স্লিপ গমচাষিদের না দিয়ে তিনি একাই পীরগঞ্জের এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, চলতি পরিষদ গঠনের এক বছরেও সদস্যরা ইউপি থেকে প্রদেয় তাঁদের সম্মানী ভাতা পাননি। অগ্রাধিকার দেওয়ার বিধান থাকলেও মহিলা সদস্যরা তা পাচ্ছেন না। এদিকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গাঁজাসহ অন্যান্য মাদক সেবনের অভিযোগ করেন ইউপি সদস্যরা।

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্রের সরকারি ল্যাপটপ, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি হলে তিনি (চেয়ারম্যান কাউসার) গত ১ ফেব্রুয়ারি থানায় মামলা করেন। কিন্তু মামলার আসামি চাঁদপুর গ্রামের রাজুকে চেয়ারম্যান তদবির করে জামিনে মুক্ত করেন। পরে রাজুর স্ত্রীকে বাদী করে ১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য সহিরুদ্দীন ওরফে গেদুর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করান।

তবে ইউপি চেয়ারম্যান কাউসার গতকাল সোমবার উপজেলার সভাকক্ষে বলেন, ‘চুরির মামলার আসামিকে জামিন করানোর কাজ একজন আইনজীবীর, আমার না। আমি নেশা করি না। আমি যেসব প্রকল্পের চেয়ারম্যান, কয়েকজন মেম্বার আমার কাছে ওই প্রকল্প থেকে ভাগ চান। আমি দেইনি, তাই তাঁরা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’ ইউএনও বলেন, ‘তাঁদের অভিযোগের বিষয়টি আমি শুনেছি। এখনো অভিযোগপত্র হাতে পাইনি। পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’ জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আওয়াল গতকাল বলেন, ‘অভিযোগটি তদন্তে স্থানীয় সরকার বিভাগের ঠাকুরগাঁও উপপরিচালককে (ডিডি এলজি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’