ক্রেতা নেই, জমেনি ঈদের বাজার

জামালপুরে বন্যার প্রভাব পড়েছে ঈদের বাজারে। গতকাল সকালে শহরের তমালতলা এলাকা থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো
জামালপুরে বন্যার প্রভাব পড়েছে ঈদের বাজারে। গতকাল সকালে শহরের তমালতলা এলাকা থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো

ঈদের আর বাকি চার দিন। জামালপুরে এখনো জমেনি ঈদের বাজার। বিপণিবিতানের বেশির ভাগ দোকান এখনো ক্রেতাশূন্য। ফলে অধিকাংশ ব্যবসায়ী ক্রেতার অপেক্ষায় অলস সময় পার করছেন। বন্যার কারণে বাজার এখনো ক্রেতাশূন্য বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

জেলা বস্ত্র ব্যবসায়ী মালিক সমিতির কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জামালপুর পৌর শহরে কাপড়, জুতা, প্রসাধন, দরজি ও গয়নার পাঁচ শতাধিক দোকান রয়েছে। অন্য সময় এসব দোকানে ঈদের কমপক্ষে ১৫ দিন আগে থেকে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। প্রায় দোকানেই এ সময় ১০ থেকে ৫০ লাখ টাকার জিনিস বিক্রি হয়ে থাকে। এবার একেকটি দোকানে ১০ হাজার টাকার জিনিসও বিক্রি হয়নি।

গত রোববার রাত ও গতকাল সকালে শহরের সবচেয়ে বড় মার্কেট কথাকলিতে গিয়ে দেখা যায়, সারিবদ্ধ কাপড়ের দোকানে মালিক-কর্মচারী বসে রয়েছেন। হাতে গোনা দু-একজন ছাড়া সব দোকান ক্রেতাশূন্য। একই অবস্থা শহরের তমালতলা, সাহা, ফেন্সি, বসাক, মিতালি মার্কেট, এসকে প্লাজা ও বিউটি প্লাজায়ও। কোথাও ভিড় নেই। মালিক-কর্মচারীরা গল্পগুজবে অলস সময় পার করছেন।

রোববার রাত নয়টার দিকে শহরের তমালতলা এলাকার সাহা এন্টারপ্রাইজে গিয়ে দেখা যায়, দু-একজন ক্রেতা পোশাক নেড়েচেড়ে দেখছেন। তেমন কোনো ক্রেতা না থাকায় কর্মচারীরা টেলিভিশন দেখছেন।

এ সময় এ দোকানের কর্মচারী মাসুদ মণ্ডল বলেন, ‘বন্যার কারণে মার্কেটে কোনো বেচাবিক্রি নেই। মালিক সাত লাখ টাকার নতুন ডিজাইনের থ্রিপিস কিনে ঢাকার মালিকের কাছে ফেরত দিলেন। অন্যবার এ সময় আমাদের দম ফেলার সময় থাকত না। এবার ক্রেতার অভাবে টিভি ও গল্প করে সময় পার করছি।’

দোকানটির মালিক সুভাস সাহা বলেন, ‘গত ঈদে দিনে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রি ছাড়িয়ে যেত। এবার ১০ হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারিনি। ঈদ উপলক্ষে বাকিতে ২৫ লাখ টাকার বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড় আনা হয়েছে। বেচাবিক্রির যে ভাব, তাতে মহাজনের বকেয়া টাকা শোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে।’

জেলা বস্ত্র ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সেলিম বলেন, ঈদের পাঁচ দিন আগে মার্কেটে পা ফেলার অবস্থাও থাকত না। ক্রেতা সামলাতে হিমশিম খেতেন মালিক-কর্মচারীরা। মার্কেটগুলোয় উৎসবমুখর পরিবেশ থাকত। এবার এখনো দু-একজনের বেশি ক্রেতা নেই। ঈদ উপলক্ষে প্রায় দোকানের মালিক ধারদেনা করে নতুন কাপড় তুলেছেন। কিন্তু বেচাবিক্রি না থাকায় তাঁরা লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।