অবশেষে সেই ১০ হাজার রোহিঙ্গার ঠাঁই শিবিরে

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে এখনো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছে। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মিয়ানমারের রাখাইন থেকে এখনো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছে। প্রথম আলো ফাইল ছবি

এ পারে কক্সবাজারে উখিয়ার আঞ্জুমানপাড়া। ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কোয়াছিবন ও নাকপুরা গ্রাম। মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে নাফ নদীর ছোট একটি অংশ। এই নদী পাড়ি দিয়ে গত সোমবার প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা উখিয়া সীমান্তে ঢুকে পড়ে। কিন্তু বিজিবি তাদের আটকে দিয়ে একই সীমান্তের শূন্যরেখায় ফেরত পাঠায়। তবে খাবার, চিকিৎসাসহ মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছিল তাদের। যাচাই-বাছাই শেষে শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের গতকাল বৃহস্পতিবার উখিয়ার বালুখালী শিবিরে ঢুকতে দেয় বিজিবি।

কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমেদ গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, তিন দিন ধরে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমানপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করছিল ওই রোহিঙ্গারা। তাদের মধ্যে ২ হাজার রোহিঙ্গাকে (অসুস্থ ও বয়স্ক) আগেই বালুখালীতে পাঠানো হয়। বাকি ৮ হাজার রোহিঙ্গার মধ্যে কারও কাছে অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদকসহ অবৈধ মালামাল রয়েছে কি না, তা যাচাই করা হয়। ইউএনএইচসিআর, আইওএম, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। এরপরই তাদের বালুখালী শিবিরে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে গতকাল দুপুরে বালুখালী শিবিরে ঢোকেন রোহিঙ্গা রহমত উল্লাহ (৫৫)। তাঁর বাড়ি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নাসাপ্রু গ্রামে। তিনি বলেন, গত ২৫ দিন আগে তাঁর চাচাতো ভাই আবদুল আজিজ পরিবার নিয়ে বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে ঢোকেন। বাংলাদেশে যারা পালিয়ে এসেছে, তাদের খাবারের কোনো অভাব নেই। চাচাতো ভাই মুঠোফোনে এ কথা তাঁকে জানান।

রহমত উল্লাহ বলেন, রাখাইনের গ্রামগুলোতে খাবারের সংকট চলছে। এর মধ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অনুগত যুবকেরা রোহিঙ্গা গ্রাম থেকে গরু, ছাগল লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া হচ্ছে এমনটা শুনেছেন তাঁরা।

এখন যারা রাখাইন থেকে আসছে তারা মূলত খাবার সংকটে পড়ার কারণেই সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছে বলে জানান উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন যেসব রোহিঙ্গা আসছে, তারা রাখাইনের বুচিডং এলাকার বাসিন্দা।