মেডিকেলে ভর্তি হয়েও দুশ্চিন্তায় নাদিম মাহমুদ

নাদিম মাহমুদ
নাদিম মাহমুদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার হরিপুর মিয়াপাড়া মহল্লার রিকশাচালক আবদুল বারির ছেলে নাদিম মাহমুদ এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাননি। কিন্তু তাতে কী, রংপুর মেডিকেল কলেজে তিনি ঠিকই ভর্তি হয়ে কথা রেখেছেন।

এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য জীবনে ভালো অবস্থানে পৌঁছানো এবং মা-বাবার মুখে হাসি ফোটানো। তাঁর মা-বাবার মুখে এখন হাসির জোয়ার। এ নিয়ে নাদিম মাহমুদও আনন্দে আত্মহারা। যদিও লেখাপড়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুরো পরিবার।

নাদিম মাহমুদ বলেন, এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে রাজমিস্ত্রির জোগালিরও কাজ করতে হয়েছে। এ কাজ তাঁকে করতে হয় সপ্তম শ্রেণি থেকেই। কেননা, রিকশাচালক বাবা আবদুল বারি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর পুরোপুরি কাজ করতে পারেন না। নাদিম মাহমুদের আয়ের টাকা পুরোটাই তুলে দিতে হয় মায়ের হাতে। পড়াশোনাও চালিয়ে যান পুরোদমে। এসএসসিতে তিনি জিপিএ-৫ অর্জন করেন। তাঁর এই অদম্য গল্পের কথা প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়। প্রথম আলো ট্রাস্ট তাঁকে বৃত্তি দেয় এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়ার জন্য। কিন্তু এইচএসসিতে অল্পের জন্য জিপিএ-৫ পাননি। পেয়েছেন জিপিএ-৪ দশমিক ৯২। এতে মা-বাবার মুখটাও মলিন হয়েছিল। মনে একটু ধাক্কা খেলেও দমে যাননি নাদিম মাহমুদ। কঠোর পরিশ্রম করে লেখাপড়া করেছেন এবং মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে সাফল্য ছিনিয়ে এনেছেন ঠিকই।

তবে এত আনন্দের পরও দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না নাদিম মাহমুদ ও বাবা আবদুল বারির। এ তো আর বাড়ির খেয়ে কাছের স্কুল বা কলেজে পড়া নয়, দূরের মেডিকেল কলেজে পড়া এবং তা ব্যয়বহুল। জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান, চিকিৎসক নূর-ই-আখতার জোবেদা বেগম, ঠিকাদার একরামুল হক ও তাঁর বিদ্যালয় রাজারামপুর হামিদুল্লাহ উচ্চবিদ্যালয় থেকে পাওয়া আর্থিক সহায়তায় নাদিম মাহমুদ ভর্তি হয়েছেন। লেখাপড়ার খরচের ব্যবস্থা তাঁর এখনো হয়নি।