সেতুর জন্য মানুষের দুর্ভোগ

সখীপুরের শাইল সিন্দুর খালে বাঁশের সাঁকো দিয়ে লোকজন পারাপার হচ্ছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা l প্রথম আলো
সখীপুরের শাইল সিন্দুর খালে বাঁশের সাঁকো দিয়ে লোকজন পারাপার হচ্ছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা l প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ইন্দারজানি-বর্গা সড়কের শাইল সিন্দুর খালের ওপর সেতু না থাকায় দুই উপজেলার ১৩ গ্রামের ৩০-৩৫ হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। খালটির পূর্ব পাশে সখীপুর ও পশ্চিম পাশে কালিহাতী উপজেলা। সেতু না থাকায় ওই দুই উপজেলার লোকজনকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষাকালে নৌকায় ও শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়।

স্থানীয় এলজিইডি সূত্র ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার কাঁকড়াজান ইউনিয়নের ইন্দারজানি গ্রামের শেষ প্রান্তে অবস্থিত শাইল সিন্দুর খালটি কালিহাতী উপজেলার বর্গা গ্রামকে আলাদা করে রেখেছে। উত্তর-দক্ষিণে বয়ে যাওয়া খালটির ওপর দিয়ে বর্ষায় খেয়ানৌকায় ও শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই দুই উপজেলার ১৩ গ্রামের মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। খালের পূর্ব পারে সখীপুরের ইন্দারজানি, বৈলারপুর, বিন্নাআটা, গড়বাড়ি, হামিদপুর, মহান্দনপুর, কাজিরামপুর, হেঙ্গারচালা গ্রাম এবং পশ্চিম পারে কালিহাতী উপজেলার বর্গা, আমজানি, সরিষাআটা, পারখি ও বিয়াইল গ্রাম। এপার থেকে ওপারে ভারী কোনো মালামাল নিতে হলে ৮-১০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়।

কালিহাতী উপজেলার বর্গা-সরিষাআটা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল হোসেন বলেন, খালে সেতু না থাকায় আশপাশের ১২-১৪টি গ্রামের ৩০-৩৫ হাজার মানুষকে প্রতিনিয়তই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষায় ওই খালে তীব্র স্রোত থাকে। তখন শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতে হয়।

কাঁকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই খালে সেতু না থাকায় সবচেয়ে বেশি কষ্ট ভোগ করছে বিন্নাআটা গ্রামের ৬০টি মৎস্যজীবী দরিদ্র পরিবার। তাদের সখীপুর কিংবা কালিহাতী উপজেলায় মাছ বিক্রি করতে গেলে খাল পাড়ি দিতেই হয়। ওই গ্রামের মৎস্যজীবী নিখিল দাস, জগদীশ চন্দ্র ও বিজয় দাস বলেন, এই খালটি তাঁদের জন্য স্থায়ী দুঃখে পরিণত হয়েছে।

বৈলারপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ওই খালের খেয়ানৌকার মাঝি আছান আলী (৫৫) বলেন, খালটি শুকিয়ে গেলে লোকজন হেঁটেই পারাপার হয়। আর বর্ষায় নৌকা ছাড়া চলাচলের আর কোনো উপায় থাকে না। বর্ষা মৌসুমে তিনি প্রতিদিন খেয়ায় করে গড়ে ৫০ থেকে ৬০টি মোটরসাইকেল পার করেন।

কাঁকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সখীপুর থেকে কালিহাতী উপজেলায় ভারী মালামাল পরিবহন করতে হলে ১০ কিলোমিটার ঘুরে ঘাটাইল উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম ধলাপাড়া হয়ে যেতে হয়। এই দুর্ভোগ কমাতে ওই খালের ওপর সেতুটি খুবই প্রয়োজন। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের লোকজন এসে খালটি মেপে গেছেন। আশা করছি, শিগগিরই একটি সমাধান হবে।’

সখীপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ কুদ্দুস বলেন, ‘শাইল সিন্দুর খালটি আমাদের ও কালিহাতী উপজেলার শেষ সীমানায়। তাই কালিহাতী উপজেলার প্রকৌশলীর সঙ্গে আলোচনা করে যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়ে শিগগিরই সেতুর প্রাক্কলন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হবে।’