মুন্সিগঞ্জে আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৮

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার ভোরে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৮ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন, মো. রতন হোসেন (২৮), খালেদা আক্তার (৩৫), মীম আক্তার (১৫), মো. মোসলেম (২৬), মো.কবির হোসেন (২২), দুদু মাদবর(৫০), সোহেল (২৪) ও কিশোর (২৩)। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভোরে ফজরের পর থেকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির সমর্থক এবং বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মহসিনা হকের সমর্থকদের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এ ঘটনায় কংস পুরা, রাজারচর, চরডুমুরিয়া, আমঘাটা, চৈতারচরসহ ৬টি গ্রামে বিক্ষিপ্তভাবে এক পক্ষ অন্য পক্ষের ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে গুলি ও কয়েক দফা ককটেল নিক্ষেপ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের ৩০-৩৫ জন আহত হয়। তাদের অনেকই গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্থানীয়রা আরও জানায়, গত ইউপি নির্বাচনের পর থেকেই এই দুপক্ষের মধ্যে আধিপত্যে বিস্তার নিয়ে বহুবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রিপন পাটোয়ারি বর্তমানে কাতার এবং মহসিনা হক ঢাকায় আছেন।

রিপন পাটোয়ারির পক্ষে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোস্তফা মোল্লা বেলা একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘খুব ভোরে কল্পনা ও ফরহাদ খাঁর লোকজন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করেছে। এ সময় আমাদের কমপক্ষে ২৫ জন নারী-পুরুষ গুলি ও ককটেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে সকালে তিনজনকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। এখন আরও ৫ জনকে পাঠানো হবে।’

মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মহসিনা হক বলেন, মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) মঞ্জুর মোর্শেদ সকালে আমাকে ফোনে হামলার বিষয়টি জানিয়েছে। মহসিনা আরও বলেন, ‘রিপনের লোকজনেরা চৈতার চরে মানিক নামে একজনকে মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে। লাশ পুলিশ, স্থানীয় ডুবুরি ও জেলেদের দিয়ে নদীতে খোঁজ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ১০-১২ জন ব্যক্তি আহত হয়েছে। এর মধ্যে কারও হাতের আঙুল, পায়ের রগকাটা হয়েছে। বাকিদের বোমার আঘাতে শরীর ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে।’

মহসিনা অভিযোগ করেন, ‘রিপন পাটোয়ারি ও চরডুমরিয়া গ্রামের মুক্তার মাদবরের নির্দেশে ঝগড়ার ঘটনা ঘটছে। রিপন বিদেশ থেকেই তার লোকজনদের অস্ত্র ও গোলা বারুদের জোগান দিয়ে সহায়তা করছেন।’

ওসি মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, আমরা ঘটনা স্থল থেকে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করেছি। মহসিনার পক্ষের একজনকে মেরে নদীতে ফেলে দেওয়ার কথা আমরা শুনেছি। তবে ঘটনাটি সত্যি কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা একদিক নিয়ন্ত্রণে নিলে ওই দুই পক্ষ অন্য দিকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।

মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকাগুলো বর্তমানে পলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।