এলপি গ্যাসে চলে অটো, ঝুঁকিতে যাত্রীরা

বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপি গ্যাস দিয়ে অটোরিকশা চালানো হচ্ছে। এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার চালকের আসনের নিচে বা যাত্রীদের আসনের পেছনে বসানো হচ্ছে । এতে যেকোনো সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় অভ্যন্তরীণ ১৩টি সড়ক রয়েছে। এ ছাড়া এ উপজেলা থেকে কুমিল্লার হোমনা ও দাউদকান্দি উপজেলায় যাতায়াতের জন্য আরও একটি সড়ক রয়েছে। এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক অটোরিকশায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এসব অটোরিকশায় জ্বালানি হিসেবে সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) ব্যবহার করার কথা। অটোরিকশার চালকদের উপজেলা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর, ৩৫ কিলোমিটার দূরে দেবীদ্বার ও ২৫ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর সদর উপজেলার মাধবদী এলাকা থেকে গ্যাস নিতে হয়। কিন্তু সেখান থেকে গ্যাস আনতে গিয়ে তাঁদের নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এর মধ্যে চাঁদাবাজি, ফিলিং স্টেশনে দীর্ঘ লাইনে থেকে সময় নষ্ট হওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য। এ কারণে প্রায় শতাধিক অটোরিকশার চালক এলপি গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।
যাত্রী আনোয়ার হোসেন, নাছির উদ্দিনসহ কয়েকজন বলেন, ‘জ্বালানি হিসেবে অটোরিকশায় এলপি গ্যাস ব্যবহার করছেন কিছু চালক। বিস্ফোরিত হওয়ার আশঙ্কা থাকায় আমরা এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার লাগানো অটোরিকশায় চলাচলের সময় আতঙ্কে থাকি।’
চালক মনির হোসেন বলেন, ‘আমি গাড়িতে নতুন সিলিন্ডার লাগাইছি, আগে কোনো সময় এই গ্যাসে অটোরিকশা চালাইনি। অনেকেই এই গ্যাস দিয়া অটোরিকশা চালাইতাছে, তাই আমিও চালাইতাছি।’
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাব্বির রহমান বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় জ্বালানি হিসেবে বিপজ্জনকভাবে এলপি গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে। যেকোনো সময় সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি এলপি গ্যাস ব্যবহারকারী অটোরিকশার চালদের এই গ্যাস ব্যবহার করতে নিষেধ করে দিয়েছেন।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় অটোরিকশা চালাতে এলপি গ্যাস ব্যবহার করার বিষয়টি আমার জানা নাই। এ বিষয়ে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ আমাদের লিখিতভাবে অনুরোধ করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিআরটিএ ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাদির হোসেনের মুঠোফোনে কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। ওই কার্যালয়ের পরিদর্শক প্রদীপ কুমার বলেন, ‘বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার দিয়ে অটোরিকশা চালানোর বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’