আপন জুয়েলার্সের দুই মালিকের মুক্তিতে বাধা নেই

বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় ৪ জুন আপন জুয়েলার্সের সাড়ে ১৩ মণ সোনা ও ৪২৭ গ্রাম হীরা আনুষ্ঠানিকভাবে জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ছবিটি গুলশান শো রুমের। প্রথম আলো ফাইল ছবি
বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় ৪ জুন আপন জুয়েলার্সের সাড়ে ১৩ মণ সোনা ও ৪২৭ গ্রাম হীরা আনুষ্ঠানিকভাবে জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ছবিটি গুলশান শো রুমের। প্রথম আলো ফাইল ছবি

অর্থ পাচারের অভিযোগে একটি করে মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম এবং তাঁর দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তাঁদের জামিন দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক তিনটি লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এর ফলে আপন জুয়েলার্সের দুই মালিক গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের কারামুক্তিতে কোনো আইনগত বাধা নেই। তবে আরও দুই মামলা থাকায় এই মুহূর্তে দিলদার আহমেদ সেলিম মুক্তি পাচ্ছেন না।

হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার বিচারপতি তিনজনকে দেওয়া জামিন স্থগিত করেছিলেন। পরে ওই স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান আপিল বিভাগ। সর্বশেষ ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগ ওই স্থগিতাদেশের মেয়াদ ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে এই সময়ের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ নিয়মিত লিভ টু আপিল করে, যার ওপর আজ শুনানি হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। আপন জুয়েলার্সের তিন মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও শেখ ফজলে নূর তাপস।

বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের নাম সামনে আসে। ওই ঘটনায় করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। গত ৪ জুন শুল্ক বিভাগ আপন জুয়েলার্সের ডিএনসিসি মার্কেট, উত্তরা, মৌচাক, সীমান্ত স্কয়ার ও সুবাস্তু ইনম শাখা থেকে প্রায় ১৫ মণ সোনা ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড জব্দ করার পর তা রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা হয়। পরে দিলদার আহমেদ সেলিম এবং তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে কর মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ পৃথক ৫টি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এসব মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তাঁরা জামিন নিলেও আদালতে হাজির না হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। পরে গত ২৪ অক্টোবর তাঁরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর পৃথক পাঁচ মামলায় তিনজন হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। গত ২২ নভেম্বর হাইকোর্ট তিনজনের জামিন প্রশ্নে রুল দেন। আইনজীবী সূত্র বলেছে, রুলের শুনানি শেষে ১৪ ডিসেম্বর রমনা থানার এক মামলায় দিলদার হোসেন এবং গুলশান থানায় করা পৃথক দুই মামলায় অপর দুই ভাই জামিন পান। উত্তরা ও ধানমন্ডি থানায় করা পৃথক দুই মামলায় দিলদার আহমেদের জামিন আবেদন সেদিন মুলতবি রাখা হয়।