চোখে ব্যান্ডেজ বেঁধে প্রতিবাদ

এভাবেই চোখে ব্যান্ডেজ বেঁধে এহসান রফিককে মারধরের প্রতিবাদ জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাজু ভাস্কর্য, ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি। ছবি: আশরাফুল আলম
এভাবেই চোখে ব্যান্ডেজ বেঁধে এহসান রফিককে মারধরের প্রতিবাদ জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাজু ভাস্কর্য, ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি। ছবি: আশরাফুল আলম

চোখে ব্যান্ডেজ বেঁধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের ছাত্র এহসান রফিককে মারধরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষার্থীরা ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র এহসানকে মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।

বামপন্থী কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মী, ডাকসুর দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছিলেন। আজকের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এহসান রফিকের কয়েকজন সহপাঠীও অংশ নেন। সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে গত মাসে আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর নিপীড়ন ও ছাত্রদের হুমকি-ধমকির পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম এই প্ল্যাটফর্মটি গঠিত হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মাসুদ আল মাহদী, সামান্তা শারমিন ও আবু রায়হান খান তাঁদের বক্তব্যে বলেন, এহসানের চোখে আঘাত করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অন্ধকারের প্রতীকমাত্র। প্রশাসনের দুর্বলতাও এ ঘটনায় বড় প্রভাব রেখেছে। তা ছাড়া ছাত্রলীগ থেকে যে তিনজনকে বহিষ্কারের কথা বলা হয়েছে, এই তিনজনই কেবল ঘটনায় জড়িত ছিলেন না। হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির কক্ষে তাঁকে দীর্ঘ সময় আটকে রাখা হয়। এর সঙ্গে তিনিও জড়িত।

এহসানের সহপাঠী দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনার ছাত্র তন্ময় কুমার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বলেন, এহসানের ওপর হামলায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাঁর চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, তাঁরা একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো অনিয়ম ও নিপীড়নের ঘটনায় তাঁদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।

তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে গত মঙ্গলবার রাত থেকে পরদিন বুধবার দুপুর পর্যন্ত দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আটকে রেখে নির্যাতন করেন। এতে তাঁর চোখ গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার স্বীকারোক্তি দিতে তাঁকে চাপ দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কথা বলে ছাত্রলীগের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তারা এসএম হল শাখা ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণবিষয়ক উপসম্পাদক মেহেদি হাসান ওরফে হিমেল এবং সহসম্পাদক ওমর ফারুক ও রুহুল আমিনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।