চার পুলিশ হত্যায় অভিযোগ গঠন: জামায়াতের আজিজসহ ২৩২ আসামি

গাইবান্ধায় চার পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় জামায়াতের সাবেক সাংসদসহ ২৩২ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। রোববার দুপুরে গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিয়ে ঘটনার প্রায় পাঁচ বছর পর এ মামলায় বিচার শুরু হলো।


২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় তাণ্ডব চালান জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর তাঁরা পিটিয়ে হত্যা করেন চারজন পুলিশ সদস্যকে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রোববার মামলার শুনানির জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আলী আহমেদ জামায়াতের সাবেক সাংসদ আবদুল আজিজসহ ২৩২ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। 

শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, অভিযুক্ত মোট ২৩৫ আসামির মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। ২৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই ২৩২ আসামির মধ্যে সাতজন পলাতক। এ ছাড়া দুই আসামি কারাগারে ও বাকিরা জামিনে আছেন। ২২৫ জন আসামি শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রোববার দুপুরে মামলার শুনানি শুরু হলে আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু আদালত জামিন নামঞ্জুর করে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর বামনডাঙ্গায় তাণ্ডব চালান জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। তাঁরা বামনডাঙ্গা রেলস্টেশনে অগ্নিসংযোগসহ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের চার পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেন। নিহত পুলিশ সদস্যরা হলেন রংপুরের পীরগাছা উপজেলার রহমতচর গ্রামের তোজাম্মেল হক, কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার কিশামত গোবধা গ্রামের হজরত আলী, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ঠাকুরপাড়া গ্রামের বাবলু মিয়া ও গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার খামার ধনারুহা গ্রামের নাজিম উদ্দিন।

এ ঘটনায় মামলা হলে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সাবেক সাংসদ আবদুল আজিজকে প্রধান আসামি করে ২৩৫ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এই আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৩ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আসামিপক্ষের এক আইনজীবী মুঠোফোনে বলেন, পুলিশ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর গাফিলতির কারণে মামলার বিচার কাজ বিলম্ব হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বলেন, মামলার প্রধান আসামি আবদুল আজিজ পলাতক, তিন আসামির মৃত্যুসহ নানা কারণে বিচারকাজ শুরু হতে বিলম্ব হয়। একই বিষয়ে রোববার মুঠোফোনে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিয়ার রহমান বলেন, এ মামলার আসামির সংখ্যা বেশি। এ ছাড়া অনেক আসামির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাই মামলার নির্ধারিত তারিখে তাঁরা আদালতে হাজির হতে পারেন না। ফলে অভিযোগ গঠন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে বিচারকাজ শুরুতে বিলম্ব হয়।