সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না

সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। ঢাকা ও রংপুরে তিনটি পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছে। আহত অন্তত ১২ জন। গতকাল শনিবার রাত ও আজ রোববার সকালে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

ঢাকা: রাজধানীতে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। গতকাল রাত ১১টার দিকে গেন্ডারিয়া ও ধানমন্ডি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

গেন্ডারিয়া থানার দয়াগঞ্জ চৌরাস্তা এলাকায় নুরুল ইসলাম হাওলাদার (৬০) নামের এক পথচারী রাস্তা পার হওয়ার সময় বাসের নিচে চাপা পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান গেন্ডারিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমীন। রাত সোয়া ১২টার দিকে নুরুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। নুরুলের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলায়। তিনি দনিয়া বাজার এলাকায় ভাড়া থাকতেন।

রাজধানীতে আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ধানমন্ডি ও আসাদগেটের মাঝামাঝি আড়ংয়ের পাশের সড়কে। সেখানে একটি প্রাইভেটকার একটি রিকশাকে ধাক্কা দিলে রিকশার যাত্রী আলমগীর হোসেন হাওলাদার (৪০) ছিটকে মাটিতে পড়ে যান। পরে প্রাইভেটকারটি তাঁকে চাপা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। আলমগীরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত আলমগীরের ভাই আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কাটাখালী এলাকায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত দুজনের লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

রংপুর: রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাকের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছে। আহত অন্তত ১০ জন। আজ সকাল পৌনে সাতটার দিকে উপজেলার দমদমা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দমদমা এলাকার দুর্ঘটনায় নিহত দুজনের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানায়, হিমেল পরিবহন নামের যাত্রীবাহী বাসটি ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও যাচ্ছিল। আর মালবোঝাই ট্রাকটি রংপুর থেকে বগুড়া যাচ্ছিল। মিঠাপুকুর উপজেলার দমদমা এলাকায় যানবাহন দুটির মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে হতাহত হওয়ার এ ঘটনা ঘটে।

পীরগঞ্জের বড় দরগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, দুর্ঘটনাস্থলের সড়কে একটি বাঁক আছে। বাঁকের কারণে যানবাহন দুটির চালকেরা পরস্পরকে দেখতে পাননি। তা ছাড়া দুটি যানবাহনই দ্রুতগতিতে চলছিল। এ কারণে চালকেরা নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় যানবাহন দুটির মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

সড়কে মৃত্যুর মিছিল
গতকাল গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়। সড়কে যত ধরনের বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম ও অবহেলা থাকা দরকার, তার সবকিছুই উপস্থিত ছিল দুর্ঘটনাস্থলে।

গতকাল ওই দুটি দুর্ঘটনা ছাড়াও যশোরের শার্শায় ট্রাকের ধাক্কায় দুই স্কুল শিক্ষার্থী, নাটোরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষে একজন চালক ও মৌলভীবাজারের জুড়িতে অটোরিকশা উল্টে একজন নিহত হন।

বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে গত বছর দৈনিক ২০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে সড়কে। আর সরকারি হিসাবে দৈনিক গড়ে প্রাণ গেছে ছয়জনের।

এভাবে প্রতিদিন সড়কে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হলেও তা প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগে ঘাটতি রয়েছে।