'ঢাকাবাসীর একটা করে নৌকা কেনা উচিত'

বৃষ্টিতে রাজধানীর কোনো না কোনো এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। প্রথম অালো ফাইল ছবি
বৃষ্টিতে রাজধানীর কোনো না কোনো এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। প্রথম অালো ফাইল ছবি

গত বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতে প্রায় প্রতিদিন রাজধানীর কোনো না কোনো এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। তখন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেছিলেন, আগামী বর্ষায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। সেই বর্ষার আর দুই মাস বাকি। কিন্তু জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির কোনো কার্যক্রমই শুরু করা হয়নি এখনো। এ বিষয়ে প্রথম আলোর পাঠকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল।

সাব্বির আহমেদ লিখেছেন, ড্রেন সংস্কারের কাজের যে গতি, গত বছরের মতো এবার টানা বৃষ্টি হলে ঢাকার অনেক রাস্তায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। মেরামতকাজের জন্য অনেক রাস্তা খুঁড়ে রাখা হয়েছে। বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে ড্রেন বা রাস্তা—কোনোটার কাজই শেষ হবে বলে মনে হয় না। জলাবদ্ধতা দূর করতে, ড্রেন ও খালগুলো দখলমুক্ত করে নির্বিঘ্নে পানি চলাচলের উপযোগী করতে হবে।

সংস্কারকাজের সময়সূচি নিয়ে কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছেন অতুল কুমার। তিনি লিখেছেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে কিছু করা হয়নি কথাটা ঠিক নয়। আসলে বর্ষাকাল আসলেই খোঁড়াখুঁড়ি কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে। আর ফেসবুকে লিখলেই কি খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ হয়ে যাবে? ঢাকার যত খালবিল আছে, সব নেতাদের কাছে লিজ দিয়ে দিন। এরা ভরাট করে মার্কেট বানাক অথবা মাছ চাষ করুক।’

নাইম ইসলামের মন্তব্য রসিকতায় পূর্ণ। তিনি লিখেছেন, ‘(সংকট নিরসনে) রাস্তা খুঁড়ে নদী করে দেওয়া যেতে পারে। এতে মাছের চাহিদা পূরণ হবে। পানিও বের হয়ে যেতে পারবে। আর নদীপথে যাতায়াত সুবিধাজনক। সবাই সেটাকে উপভোগও করবে।’

জলাবদ্ধতার দায় শুধু কর্তৃপক্ষের নয়, নাগরিকদের অসচেতনতাও এর জন্য দায়ী বলে মনে করেন কয়েকজন পাঠক। মাধব হাজরা লিখেছেন, ‘আগে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। যেমন যেকোনো ধরনের শক্ত পদার্থ, পলিথিনসহ আবর্জনা ড্রেনে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। বুড়িগঙ্গার নাব্যতা বাড়াতে হবে। ড্রেন সংস্কার করতে হবে।’

আহমেদ জাহিদ মনে করেন, যত দিন রাজধানীর খালগুলো দখল মুক্ত না হবে, তত দিন জলাবদ্ধতা দূর হবে না। সঙ্গে ড্রেনেজ-ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। এখন মূল বিষয় হলো দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো দখলমুক্ত হবে কি না? কারণ, প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই এসব খাল দখল করে রেখেছে।

নিলুফা আক্তারের পরামর্শ—উন্নত দেশের প্রযুক্তি অনুসরণ করা। তিনি লিখেছেন, ‘উন্নত দেশগুলোতে গিয়ে দেখুন, তারা কীভাবে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত রয়েছে। সেই সিস্টেম অনুযায়ী কাজ করেন। তবেই জলাবদ্ধতামুক্ত হবে প্রিয় ঢাকা শহর।’

কাজের ধীর গতি ও অব্যবস্থাপনাকে দুষেছেন মাসুদ আলম। তিনি লিখেছেন, নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন তদারকিতেই সম্ভব।

সমীর সাহা তাঁর মন্তব্যে তিনটি পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, রাজধানীর পার্শ্ববর্তী যেসব খাল আছে, সেগুলো ভালোভাবে খনন করলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। ঢাকা ওয়াসার যে পাইপলাইন আছে, সেগুলো অনেকটাই অকেজো। সেগুলো সক্রিয় করতে হবে। ময়লা-আবর্জনার ড্রেন সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে ময়লা জমাট বাঁধতে না পারে।

বিপ্লব বসু মজা করে লিখেছেন, ‘ঢাকাবাসীর প্রত্যেকের একটা করে নৌকা কেনা উচিত। আর যাদের নৌকা কেনার সামর্থ্য নেই, তাদের সরকার থেকে একটা করে নৌকা দেওয়া হোক।’