শাবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের ১২ নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ১২ নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার রাতে শাখা ছাত্রলীগের একপক্ষের ওপর অপর পক্ষের গুলির ঘটনায় এ সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি। একই ঘটনায় ২২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।

বুধবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতা–কর্মীদের মধ্যে প্রথম দুজনকে স্থায়ী এবং অন্যদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীরা হচ্ছেন ছাত্রলীগের শাবিপ্রবি শাখার সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবু সাঈদ আকন্দ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সাজিদুল ইসলাম সবুজ, শাবিপ্রবি শাখার সহসভাপতি সৈয়দ জুয়েম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম অন্তু, সাংগঠনিক সম্পাদক দোলন আহমেদ, উপমুক্তিযুদ্ধ–বিষয়ক সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র বর্মণ, সদস্য মুনকার কাজী, তৌফিকুর রহমান তন্ময়, বাসির মিয়া, মেহের উদ্দিন হিমেল, শাখা ছাত্রলীগের কর্মী রায়হান আহমেদ ও শরিফুল মালেক।

শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান প্রথম আলোকে বলেন, বহিষ্কৃত নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যাম্পাসে টেন্ডারবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে একই ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম সিলেট নগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় বহিষ্কৃত প্রথম নয়জন ও শাখা ছাত্রলীগ কর্মী মুস্তাফিজুর রহমান খান নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১২ জনকে আসামি করা হয়। জালালাবাদ থানার সহকারী কমিশনার মুনাদীর ইসলাম প্রথম আলোকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

১২ নেতা-কর্মী বহিষ্কারের ঘটনায় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাত ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান ও সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম পক্ষের নেতা-কর্মীরা শাহপরান আবাসিক হলে ও বহিষ্কৃত নেতা সাজিদুল ইসলাম এবং আবু সাঈদ আকন্দ পক্ষের নেতা-কর্মীরা হলের বাইরে অবস্থান করছেন।

এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁরা শাহপরান হলের দিকে যান। শাহপরান হলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের নেতা-কর্মীরা তালা দিয়ে ভেতরে অবস্থান নেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর জাহিদ হাসান বলেন, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৎপর রয়েছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি রেস্তোরাঁয় ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠক চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি তরিকুল ইসলামের ওপর গুলির অভিযোগ ওঠে বহিষ্কৃতদের বিরুদ্ধে। একই হামলায় ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ রনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।