আত্মনির্ভরশীল হবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ফোকাস বাংলা
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে বাংলাদেশ কারও কাছে হাত পেতে নয় বরং বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে এবং নিজস্ব সম্পদ দিয়েই আত্মনির্ভরশীল হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশ একদিন জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবেই গড়ে উঠবে এবং বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে। কারও কাছে হাত পেতে নয়, আমাদের যতটুকু সম্পদ, তাই দিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব এবং এ দেশকে আমরা আরও সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাব।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পদক-২০১৮ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই, আমাদের স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা নিয়ে এই বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, সে যাত্রা যেন থেমে না যায়। এই যাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ আর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর কাছে ক্ষমতায় থাকা মানে জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের কর্তব্য পালন করা। আর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই বাংলাদেশকে গড়ে তোলা।

এ বছর সংস্কৃতিমন্ত্রী এবং বিশিষ্ট অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরসহ ১৮ জনকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা এই স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ, সাহিত্য, সংস্কৃতি, উন্নয়নসহ জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য এই পদক প্রদান করা হয়।

স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

এ বছর যাঁরা স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হয়েছেন, তাঁরা হচ্ছেন কাজী জাকির হাসান (মরণোত্তর), শহীদ বুদ্ধিজীবী এস এম এ রাশীদুল হাসান (মরণোত্তর), শংকর গোবিন্দ চৌধুরী (মরণোত্তর), এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ বীর উত্তম-এসিএসসি (অব.), এম আবদুর রহিম (মরণোত্তর), ভূপতি ভূষণ চৌধুরী ওরফে মানিক চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ লে. মো. আনোয়ারুল আজিম (মরণোত্তর), হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ আমানুল্লাহ্ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান (মরণোত্তর), শহীদ মতিউর রহমান মল্লিক (মরণোত্তর), শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক (মরণোত্তর), আমজাদুল হক, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, কৃষি সাংবাদিকতায় চ্যানেল আইয়ের পরিচালক (বার্তা) শাইখ সিরাজ, চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. এ কে এম ডি আহসান আলী, সমাজসেবায় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, সাহিত্যে সেলিনা হোসেন ও খাদ্যনিরাপত্তায় ড. মো. আবদুল মজিদ।

পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন তাঁরা নিজে এবং মরণোত্তর পদক বিজয়ীদের পক্ষে তাঁদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা এবং পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেন। অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মজিদ পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই পুরস্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে এবং দেশ ও জাতির প্রতি তাদের কর্তব্যবোধ আরও জাগ্রত হবে। তারা এই দেশকে ভবিষ্যতে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম স্বাধীনতা পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং স্বাধীনতা পদক বিজয়ীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেন। এ পর্যন্ত ২৪৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পুরস্কার হিসেবে ৩ লাখ টাকার চেক, ১৮ ক্যারেট সোনার একটি পদক ও সনদ দেওয়া হয়।