অ্যাসিড নিক্ষেপের দায়ে ৪ জনের কারাদণ্ড

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় একই পরিবারের চারজনকে অ্যাসিড নিক্ষেপের দায়ে এক নারীসহ প্রতিবেশী চারজনকে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) আবদুল মান্নান এ দণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন উপজেলার পূর্ব ইসলামাবাদ গ্রামের মনির হোসেন (২৫), তাঁর মেয়ে হোসনে আরা বেগম (৩০), একই বাড়ির সুমন মিয়া (২৮) ও কাবিল মিয়া (২৬)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০১ সালের ২৫ এপ্রিল উপজেলার পূর্ব ইসলামাবাদ গ্রামে মনির হোসেন ও হোসনে আরা খলিলুর নামে এক প্রতিবেশীর জায়গায় ঘর ওঠাতে চেষ্টার করেন। এতে খলিলুর বাধা দেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিবাদ হয়। এর জেরে ওই দিন রাত একটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় খলিলুর রহমানের বড় মেয়ে লাকী আক্তার (২৫), লাকীর স্বামী মতিউর রহমান (৪০), ছোট মেয়ে রাহিমা আক্তার (১৪) ও বড় মেয়ের কন্যা (নাতনি) জান্নাতুল ফেরদৌসের (৪) শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন ওই আসামিরা। এতে তাঁদের শরীর ঝলসে যায়। পরে তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় খলিলুর রহমান ২৮ এপ্রিল মতলব উত্তর থানায় প্রথমে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে মামলাটি দীর্ঘদিন তদন্ত করে ওই আসামিদের চিহ্নিত করা হয়। আসামিদের মধ্যে মৃত জুনাব আলীর স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৫৫) তদন্ত চলাকালীন মারা গেলে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মামলার তদন্তকারী চার কর্মকর্তা পরপর বদলি হন। পরে চাঁদপুর সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) অরুণ কুমার দত্ত ২০০২ সালের ২০ এপ্রিল তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। অভিযোগপত্র নম্বর ২৬।

চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর হাবিবুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘মামলাটি প্রথমে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চলমান ছিল। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত শুরু হলে মামলার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছরে আদালত ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামিদের ওই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।’