ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে ফের অনশনে ওয়ালিদ আশরাফ

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেছেন ওয়ালিদ আশরাফ। ছবি: প্রথম আলো
উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেছেন ওয়ালিদ আশরাফ। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দাবিতে এর আগে ১৫ দিন অনশন করেন ওয়ালিদ আশরাফ। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ অনুষদের সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্সের এই শিক্ষার্থী। আবারও একই দাবিতে গতকাল রোববার দুপুর থেকে অনশন শুরু করেছেন তিনি।

আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে (ভিসি চত্বর) ওয়ালিদ আশরাফের সঙ্গে কথা হয়। সেখানেই অনশনে বসেছেন তিনি। ওয়ালিদ আশরাফ বলছেন, আদালতের দেওয়া নির্দেশের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আহ্বানেও সাড়া দেয়নি প্রশাসন। এ জন্য আবারও একই দাবিতে তিনি অনশনে বসেছেন।

গত বছরের ১০ অক্টোবর হাইকোর্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্যানেলকে অবৈধ ঘোষণা করে পূর্ণাঙ্গ সিনেটের মাধ্যমে ছয় মাসের মধ্যে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের নির্দেশ দেন। সে হিসেবে আদালতের দেওয়া সময়সীমা শেষ হবে চলতি মাসের ১০ তারিখ। আদালতের রায়ের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়া দেখে ওয়ালিদ আশরাফ আবারও অনশনে বসেছেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে আদালতের দেওয়া তারিখের বিষয়টি আমলে না নিয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে ২০১৯ সালে মার্চের মধ্যে ডাকসু এবং হল সংসদ নির্বাচন দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এ কারণে চলতি বছরের ৩০ মের মধ্যে সব হলে ডাকসু নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে বলেছে সিন্ডিকেট।

ওয়ালিদ আশরাফ প্রথম আলোকে বলেন, ডাকসু নির্বাচন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সমানাধিকার থাকবে। শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া দেখার মতো একটি বিষয় থাকবে। এখন শিক্ষার্থীরা সবাই একধরনের ‘অরাজকতার’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন প্রতিটি সরকারের আমলে শিক্ষার্থীরা শুধু ‘ব্যবহৃত’ হয়ে আসছেন।

এবারও ওয়ালিদ আশরাফ তাঁর ব্যবহৃত বাইসাইকেলটি পাশে রেখে অনশন শুরু করেছেন। তিনি যে জায়গাটিতে বসে আছেন, তার পাশেই পুরোনো একটি ছোট পোস্টারে লেখা, ‘ডাকসুর নির্বাচন চাই। প্রজন্ম ষড়যন্ত্র নিপাত যাক, স্বাধীন বাংলা মুক্তি পাক।’ পোস্টারটিতে আরও লেখা, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে দলতন্ত্র দরকার নাই, দলীয় সন্ত্রাস থেকে মুক্তি চাই’।

এ ছাড়া ওয়ালিদ আশরাফ সাত দফা-সংবলিত একটি পোস্টার তাঁর সঙ্গে রেখেছেন। সেখানে ডাকসুর দাবির চেয়ে রাষ্ট্র ও রাজনীতির বিষয়ে দাবি বেশি দেখা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব দাবি রাজনৈতিক এটা ঠিক। তবে তাঁর সাত দফার দফাগুলোর সমাধান হলে ডাকসু নির্বাচনের পথও পরিষ্কার হবে।

রাজনৈতিক বিষয়ে পরিবর্তনের বিষয়ে কথা বলার একপর্যায়ে ওয়ালিদ আশরাফ বলেন, ১০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ডাকসু বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে তিনি কী করবেন—তা জানাবেন। এ ছাড়া প্রয়োজন হলে নিজে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করবেন বলেও জানান।