বিএনপি নেতা শামসুল ইসলাম ঢাকার হাসপাতালে মারা গেছেন

এম শামসুল ইসলাম।
এম শামসুল ইসলাম।

সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এম শামসুল ইসলাম (৮৭) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। শাসমুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান প্রথম আলোকে এ কথা জানিয়েছেন। শামসুল ইসলামে মৃত্যুতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোক প্রকাশ করেছেন।

শামসুল ইসলাম দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সর্বশেষে তিনি দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। অসুস্থতার কারণে সর্বশেষ কাউন্সিলের পর কমিটি থেকে বাদ পড়েন তিনি।

শামসুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে তথ্য, খাদ্য, ভূমি, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।

বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, আজ বাদ মাগরিব গুলশানের আজাদ মসজিদে শামসুল ইসলামের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। কাল সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয়, বেলা ১১টায় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৃতীয় জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ নেওয়া হবে মুন্সিগঞ্জ সদরের রামপাল ইউনিয়নে। সেখানে বাদ জুমা জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

শামসুল ইসলাম দুই ছেলে রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রী ২০১৬ সালে মারা যান। বড় ছেলে সাইফুল ইসলাম বিএনপির থিংক ট্যাঙ্ক সংগঠন হিসেবে পরিচিত ‘জি-নাইন’ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।

সংক্ষিপ্ত জীবনী: শামসুল  ইসলামের জন্ম ১৯৩২ সালের পয়লা জানুয়ারি। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বাধীন তৎকালীন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) ঢাকা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং ওই ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য ছিলেন ।
১৯৬৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান পরিবার পরিকল্পনা সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন । বিভিন্ন মেয়াদে তিনি লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি, সম্পাদক ও ডেপুটি গভর্নরের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

শামসুল ইসলাম বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি , বাংলাদেশ বক্ষব্যাধি সমিতি , বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি, লায়ন্স ফাউন্ডেশন, বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন ও মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর সমিতির আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন । ৫ম থেকে ৮ম জাতীয় সংসদে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাণিজ্যমন্ত্রী এবং একই সঙ্গে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন । এর আগে তিনি মার্চ ১৯৯১ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৯১ পর্যন্ত ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী এবং সেপ্টেম্বর ১৯৯১ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ পর্যন্ত খাদ্য মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । তিনি ১০ অক্টোবর ২০০১ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত সরকারের ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।