'মে দিবসে শ্রমিক দলকে শোভাযাত্রা-সমাবেশের অনুমতি দেয়নি পুলিশ'

নজরুল ইসলাম খান। প্রথম আলো ফাইল ছবি
নজরুল ইসলাম খান। প্রথম আলো ফাইল ছবি

মহান মে দিবস উপলক্ষে সমাবেশ ও শোভাযাত্রার জন্য পুলিশ বিএনপিকে অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ করেছে দলটি।

আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম খান এ অভিযোগ করে বলেন, মে দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চেয়েছিল বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় সমাবেশ করা যায়নি। বিষয়টি আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নকে বিএনপি জানাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এস এম শিবলী নোমান প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি সমাবেশ বা শোভাযাত্রার কোনো অনুমতি চায়নি। বরং বিএনপি শোভাযাত্রা করতে পারে ভেবে পুলিশ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। অথচ দলটি নিজে থেকেই কোনো শোভাযাত্রা করেনি।

বিএনপি জানিয়েছে, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে শ্রমিক দলের র‌্যালি বের করার কথা ছিল। গতকাল রাতে পল্টন মডেল থানা থেকে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিমসহ নেতৃবৃন্দকে ডেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনো র‌্যালি করা যাবে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে শ্রমিক দল।

সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য। সদস্য হিসেবে আমরা কখন কোন প্রোগ্রাম করি, সেটা আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নকে জানাতে হয়। এই যে আমরা প্রোগ্রাম করতে পারলাম না, কেন পারলাম না সেটাও আমাদের জানাতে হবে, আমরা জানাব।’

এ সময় সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে র‌্যালি করার জন্য অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করি। গতকাল বারবার আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সন্ধ্যা সাতটায় পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমাদের জানিয়ে দেন, কোনো র‌্যালি শ্রমিক দল করতে পারবে না।’

শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম বলেন, ‘আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে হাজার হাজার শ্রমিক মিছিল মিটিং করছে। অথচ আমরা দেশের সবচেয়ে বড় শ্রমিক সংগঠন, মিছিল করতে অনুমতি দেওয়া হলো না। এই সরকারের পুলিশ বাহিনী ক্ষমতাসীন দলের নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে পরিণত হচ্ছে। এটা নিন্দনীয়।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও জনসভা করতে দেওয়া হলো না। নয়া পল্টনের কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলও করতে দেওয়া হলো না। দিনে দিনে সরকার আরও বেশি স্বৈরাচারী হয়ে পড়েছে। এই তথ্য যখন বিশ্ববাসী জানবে, বাংলাদেশকে স্বৈরাচারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করা জার্মানির সেই প্রতিবেদনটিকে তা আরও শক্তিশালী করবে। সেই প্রতিবেদন যে সঠিক, সেটার পক্ষে আরেকটি প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে সরকারের আজকের এই সিদ্ধান্ত।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুল করিম মজুমদার, ফজলুল হক মোল্লা, মনজুরুল ইসলামসহ শ্রমিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।