টিলা কেটে বসতঘর!

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ও টিলা কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে ভূমিধসে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, রামগড় পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়সংলগ্ন একটি কাটা টিলার পাশে বসতঘর তৈরি করছেন স্থানীয় বাসিন্দা জুনাব আলী। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগেই টিলাটি কাটা হয়েছে। এখন ধসে পড়া মাটি সরিয়ে ঘর করছি।’ নতুনভাবে টিলা কাটার অভিযোগ অস্বীকার করেন জুনাব আলী।
রামগড় বাজারের ব্যবসায়ী মো. ফারুকুর রহমান ও মো. সেলিম বলেন, নিষেধ করা সত্ত্বেও জুনাব আলী টিলা কেটে ঘর তৈরি করছেন। তাঁরা জানান, এ ছাড়া পাতাছড়া ইউনিয়নের থলিবাড়ি, তৈচালা, নাকাপা ও শ্মশান টিলা এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে।
এদিকে জালিয়াপাড়া-রামগড় সড়কের তৈচালায় কালভার্ট নির্মাণের জন্য গত সপ্তাহে একটি টিলা কাটা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের এক্সকাভেটর ও বুলডোজার ব্যবহার করে ঠিকাদার টিলাটি কেটেছেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেলিম অ্যান্ড ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক আবু বক্কর ছিদ্দিক টিলা কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, রাস্তার কাজে মাটি ব্যবহার করা হয়েছে; ব্যক্তিগত কোনো কাজে নয়। তবে ভবিষ্যতে তাঁরা এ বিষয়ে সজাগ থাকবেন।
সওজের রামগড় কার্যালয়ের সেকশন অফিসার স্বপন বড়ুয়া বলেন, কালভার্ট নির্মাণের জন্য টিলা কাটার বিষয়ে তাঁদের জানা নেই। এ ব্যাপারে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, সওজের বিভিন্ন সরঞ্জাম ভাড়ায় ঠিকাদারকে দেওয়ার নিয়ম আছে।
এদিকে পৌরসভার শ্মশান টিলার মাটি কেটে নেওয়ায় এলাকায় বসবাসরত পরিবারগুলোর বসতভিটা হুমকিতে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. এনামুল হক ও শান্তি রঞ্জন ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, ভূমিধসের আশঙ্কায় তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ ছাড়া দাতারামপাড়ার বাসিন্দা সালেহা বেগম ও আবদুল কাদের বলেন, সম্প্রতি ভূমিদস্যুরা এলাকায় একটি পাহাড় কেটেছে। এতে তাঁদের বসতঘরের ওপর মাটি ধসে পড়ার আশঙ্কা আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, রামগড় এলাকায় পাহাড় বা টিলা কাটার অভিযোগ তাঁর কাছে এসেছে। সম্প্রতি নাকাপা ও তৈচালা এলাকায় পাহাড় কাটার খবর তিনি জেনেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অসাধু ব্যক্তিরা এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।