ডুবে যাওয়া কয়লাবোঝাই লাইটার জাহাজটি উদ্ধার করা হলো

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

সুন্দরবনের ভেতরে মোংলা সমুদ্রবন্দরের পশুর চ্যানেলে প্রায় দেড় মাস আগে ডুবে যাওয়া কয়লাবোঝাই লাইটার জাহাজটি উদ্ধার করা হয়েছে। এমভি বিলাশ নামের ওই জাহাজ বুধবার দুই টুকরো করে উদ্ধার করা হয়।

জাহাজটির দুটি অংশ টাক বোটের সাহায্যে টেনে দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১১ নটিক্যাল মাইল দূরে মোংলা উপজেলার কানাইনগরের বাইদ্দার চরে এনে রাখা হয়েছে।
কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সাহারা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. লালন হাওলাদার বলেন, ‘ডুবে যাওয়ার পর থেকে নৌযানটি উদ্ধারে আমরা চেষ্টা করে আসছি। এ জন্য গত ২৪ এপ্রিল মেসার্স হোসেন স্যালভেস নামে স্থানীয় একটি উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়। তারা জাহাজটি থেকে কয়লা উত্তোলনের পর এটিকে তোলার চেষ্টা করে। বৈরী আবহাওয়া এবং নদীতে পানির চাপ বেশি থাকায় উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়। জাহাজটিকে লোহার রশির (দড়ি) সাহায্যে টেনে তোলার চেষ্টা কয়েক দফা ভেস্তে গেলে আমরা নৌযানটিকে কেটে নদী থেকে তোলার সিদ্ধান্ত নিই। অবশেষে আমাদের নিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠান উদ্ধারকাজ শেষ করতে পেরেছে।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, ডুবে যাওয়া এমভি বিলাশ জাহাজটিকে দুই টুকরো করে নদী থেকে তোলা হয়। পরে হাড়বাড়িয়া থেকে প্রায় ১১ নটিক্যাল মাইল দূরে মোংলার কানাইনগর বাইদ্দার চরে এনে রাখা হয়েছে।
এর আগে ডুবে থাকা জাহাজ থেকে পানি পলিমাটি মিশ্রিত কিছু কয়লা পাম্পের মাধ্যমে উত্তোলন করে ৪০০ টনের একটি বাল্কহেডে করে যশোরের নওয়াপাড়ায় নিয়ে যান আমদানিকারকেরা। এখনো কিছু কয়লা জাহাজের দুটি আলাদা অংশের ভেতরে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র ও বন্দরের স্টিভিডরস জুলফিকার আলী বলেন, মোংলা বন্দরের নৌ-চ্যানেল পশুর নদটি সুন্দরবনের মধ্যে। বর্তমান সময়ে মোংলা বন্দরে দেশি-বিদেশি জাহাজ আসার সংখ্যা বেড়েছে। সে জন্য দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়েছে। তবে খুলনা অঞ্চলে বিআইডব্লিউটিএর, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের আধুনিক কোনো উদ্ধারকারী জলযান নেই। ফলে কোনো জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়লে উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে। ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ঘটনার শঙ্কাও বেড়ে যায়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এ কে এম ফারুক হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে বন্দরের জন্য নিজস্ব উদ্ধারকারী নৌযান কেনা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বছরই আমরা একটি ওয়েল স্পিল রেসপন্স/রিকভারি ভ্যাসেল কিনেছি।’
বন্দরের জন্য উদ্ধারকারী জাহাজ কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য তারা একটি প্রকল্প তৈরি করছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ এপ্রিল রাতে মোংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়ার ৫ নম্বর অ্যাংকারের কাছে ডুবচরে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় এমভি বিলাশ। ৭৭৫ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এমভি বিলাস ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল।