বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণীর জামা ছিঁড়ে যৌন নিপীড়ন

সাত দিনের রিমান্ডে থাকা যুবক সজল। ছবি: সংগৃহীত
সাত দিনের রিমান্ডে থাকা যুবক সজল। ছবি: সংগৃহীত

বাবা-মায়ের সঙ্গে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় থাকেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রী। গতকাল বুধবার বিকেলে মাকে নিয়ে বাড্ডার একটি শপিং মলে ঈদের কেনাকাটা করতে যান। কেনাকাটা শেষে সন্ধ্যায় রিকশা করে যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখন স্থানীয় দুই যুবক রিকশা থামিয়ে ওই ছাত্রীকে মারধর করে জামাকাপড় ছিঁড়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এতে ওই ছাত্রীর মা বাধা দিলে তাঁকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করা হয়।

ওই ছাত্রীর ব্যবসায়ী বাবা বাড্ডা থানায় বুধবার রাতেই এমন অভিযোগ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠিয়েছে বাড্ডা থানা-পুলিশ। আর এ ঘটনার রহস্য বের করার জন্য দুই যুবককে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেছে পুলিশ।

আদালত অবশ্য সাত দিনই দুই যুবকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের করতে পুলিশকে অনুমতি দিয়েছেন। গ্রেপ্তার দুই যুবক হলেন সজল (২৭) ও জসিম (২২)। সজল ও জসিম আছেন বাড্ডা পুলিশের হেফাজতে। তাদের বাসা একই এলাকায়।

ওই ছাত্রীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, সজল বেকার। কোনো কাজ করেন না। চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর মেয়েকে সজল উত্ত্যক্ত করে আসছিল। নিষেধ করা সত্ত্বেও সহযোগীদের নিয়ে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করা অব্যাহত রাখে সজল। কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে ওই ছাত্রীর বাবা দাবি করেন, কেনাকাটা করে যখন তাঁর মেয়ে এবং স্ত্রী বাসায় ফিরছিলেন তখন সজল ও তাঁর সহযোগীরা রিকশা থামিয়ে এই ঘটনা ঘটায়।

মামলায় ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, রিকশা থামানোর কারণ জানতে চাইলে সজল ও তাঁর সহযোগী জসিম মেয়ে ও তাঁর স্ত্রীকে গালিগালাজ করতে থাকেন। এ সময় মেয়েকে সজল তাঁর সঙ্গে যাওয়ার জন্য হাত ধরে টান দেয়। বাধা দিলে সজল মেয়ের চশমা খুলে ফেলে দেয় এবং জামা ছিঁড়ে ফেলেন। সজলের হাত থেকে মেয়েকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে তাঁর বন্ধুরা আমার স্ত্রীকে মাটিতে ফেলে নির্যাতন করেন।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, সজলের বিরুদ্ধে আগে থেকে নানা অভিযোগ আছে। বিশেষ করে তরুণীদের উত্ত্যক্ত করার। আর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ওই তরুণীকে অনেক দিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল।

ওই ছাত্রীর বাবা অসহায়ত্বের সুরে বলেন, সজলের কারণে তাঁর মেয়ে সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকেন। অনেকবার সজলকে উত্ত্যক্ত না করার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রব প্রথম আলোকে বলেন, কেন ওই ছাত্রী ও তাঁর মাকে মারধর এবং যৌন নিপীড়ন করা হয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। সজল ও তাঁর সহযোগী জসিমকে বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিনি জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবেন।

আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, সজল বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীর জামা ছিঁড়ে ফেলে যৌন হেনস্তা করেছেন।