সিলেটে ওঁরাওদের জায়গায় ইউপি চেয়ারম্যানের ঘর!

সিলেট শহরতলির বালুচর এলাকায় আদিবাসী ওঁরাওদের জায়গায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের লোকজন জোর করে ঘর তুলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালের দিকে একদল লোক সেখানে গিয়ে ঘর তুলতে শুরু করলে আদিবাসীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এলে ঘর নির্মাণকারীরা পালিয়ে যান।
আদিবাসী ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট সদর উপজেলার টুলটিকর ইউনিয়নের বালুচরের চন্দনটিলা এলাকায় ওঁরাও আদিবাসীদের বসবাস। গতকাল সকালে একদল লোক রথীন্দ্র উরাংয়ের জায়গায় বাঁশের খুঁটি ও টিন দিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। আদিবাসীদের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হলেও ঘর নির্মাণকারীরা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মছব্বিরের লোক পরিচয় দিয়ে তাঁর নির্দেশেই ঘর নির্মাণ করছেন বলে জানান। খবর পেয়ে আদিবাসী সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীরা সেখানে জড়ো হয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানান। পুলিশের একটি দল সেখানে গেলে ঘর নির্মাণকারীরা কৌশলে পালিয়ে যান।
রথীন্দ্র উরাং জানান, খরিদ সূত্রে চন্দনটিলা এলাকার কিছু জমির মালিক দাবি করে ইউপি চেয়ারম্যান মছব্বির দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বাধার মুখে পুরোপুরি দখল করতে পারছেন না। গতকাল সে রকম চেষ্টা করলে ঘটনাটি স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা, পুলিশ ও আদিবাসী সংগঠনের নেতাদের জানানো হয়।
গতকাল বিকেলে এ ব্যাপারে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান মছব্বিরের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। একপর্যায়ে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
‘সিলেট অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠী’ সংগঠনের সদস্যসচিব লক্ষ্মীকান্ত সিংহ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইউপি চেয়ারম্যান মছব্বির চন্দনটিলার মালিকানা দাবি করছেন। কিন্তু ওই জায়গা পুরোটাই আদিবাসী ওঁরাওদের। গতকাল ঘর নির্মাণের খবর পেয়ে টুলটিকর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আবদুল শুকুর ঘটনাস্থলে যান। তিনি বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুলিশকে জানান। কিন্তু থানার পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন জানান, রথীন্দ্র উরাংয়ের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সেখানে একটি ঘর নির্মাণের চেষ্টা হয়েছিল। নির্মিত ঘরের অংশবিশেষ পুলিশ দেখে এসেছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপাতত অভিযোগ সাধারণ ডায়েরি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে দখলদার শনাক্ত হলে ডায়েরিকে মামলায় রূপান্তর করা হবে।