'শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা' চালু করছে গ্রামীণফোন, টেলিনর ও ইউনিসেফ

অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তাবিষয়ক প্রচারণায় ইউনিসেফের সঙ্গে গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপের চুক্তি হয়। ছবি: গ্রামীণফোনের সৌজন্যে
অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তাবিষয়ক প্রচারণায় ইউনিসেফের সঙ্গে গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপের চুক্তি হয়। ছবি: গ্রামীণফোনের সৌজন্যে

দেশের শিশু-কিশোরদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে চালু হচ্ছে বিশেষায়িত কর্মসূচি। এতে ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী চার লাখ স্কুলগামী শিক্ষার্থীকে যুক্ত করা হবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করবে ইউনিসেফ, গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপ। আজ রোববার এ-সংক্রান্ত চুক্তি সই করেছে প্রতিষ্ঠান তিনটি।

এ চুক্তির অধীনে ইউনিসেফ, গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপ চলতি বছর ‘শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা’ শীর্ষক বিশেষায়িত কর্মসূচি চালু করবে। এ উদ্যোগে ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী চার লাখ স্কুলগামী শিক্ষার্থীকে সরাসরি সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে ক্ষমতায়ন করা হবে। পাশাপাশি এ উদ্যোগের মাধ্যমে ৫০ হাজার বাবা-মা, অভিভাবক ও শিক্ষকদের জানানো হবে কীভাবে নিরাপদ ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। এ ছাড়া শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তাবিষয়ক তথ্য যোগ করার মাধ্যমে শিশুদের হেল্পলাইন (১০৯৮) সেবার সম্প্রসারণ ঘটানো হবে।

চুক্তিতে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ রিপ্রেজেনটেটিভ এদুয়ার্দ বেগবিদি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে ‘বৈষম্য হ্রাসে’র লক্ষ্য অর্জনে গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপ শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তাকে তাদের বৈশ্বিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নিয়েছে।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছেছে। তবে অনেকের মধ্যে এখনো ইন্টারনেট নিয়ে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। ২০১৪ সালে থেকে বাংলাদেশের স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ইন্টারনেট শিক্ষা এবং এ-বিষয়ক পরামর্শদান নিয়ে গ্রামীণফোন সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছে। নিরাপদ ইন্টারনেট কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত দেশের ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করেছে। এ ছাড়া গ্রামীণফোন ও ইউনিসেফ, নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার এবং এর সর্বোত্তম পদ্ধতি নিয়ে যৌথভাবে অভিভাবকদের জন্য গাইড বই প্রকাশ করেছে।

অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলি বলেন, ‘আমরা ইন্টারনেট ব্যবহারে তরুণদের নিরাপদ রাখতে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাই, বাংলাদেশের মানুষ কোনো ধরনের শঙ্কা কিংবা রক্ষণশীল মনোভাব ছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহার করে এর সুবিধাগুলো গ্রহণ করুক।’
তিনি বলেন, শিশুদের জন্য নিরাপদে শেখা ও বিশ্ব তথ্যভান্ডারে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধিতে প্রতিষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি ও আগ্রহ কীভাবে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে, ইউনিসেফের সঙ্গে তাদের যৌথ অংশীদারত্বই তার প্রমাণ দিচ্ছে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এদুয়ার্দ বেগবিদি বলেন, শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অনলাইন কার্যক্রম তাদের জন্য অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি করেছে। নিজের অধিকার নিশ্চিত করতে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বেড়েছে। তবে ইন্টারনেট ব্যবহার শিশু কিশোরদের জন্য কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি সৃষ্টি করে। তাই শিশু-কিশোরদের ইন্টারনেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে তাদের অনলাইন কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট হতে হবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান এবং চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেনসহ গ্রামীণফোন ও ইউনিসেফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।