সাড়ে ৪৬ শতাংশ কেন্দ্রে অনিয়ম: ইডব্লিউজি

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাড়ে ৪৬ শতাংশ কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে বলে মনে করছে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি)। এ কেন্দ্রগুলোতে ১৫৯টি নির্বাচনী অনিয়মের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছে সংস্থাটি। এসব অনিয়মের মধ্যে আছে জোর করে ব্যালটে সিল মারা, ভোটের সংখ্যা বাড়িয়ে লেখা, কেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে প্রচার চালানো ও ভোটকেন্দ্রের ভেতর অনুমোদিত ব্যক্তিদের অবস্থান।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে প্রাথমিক বিবৃতি তুলে ধরে ইডব্লিউজি। সংস্থাটি লিখিত বক্তব্যে জানায়, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে দুপুরের দিকে চারটি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তারা ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দেন। ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সিল মারতে দেখা গেছে। একই কেন্দ্রে বিকেল চারটার দিকেও সিল মারার ঘটনা ঘটেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি কেন্দ্রে বেলা ১১টার দিকে পাঁচজন ভোটারকে মেয়র প্রার্থীর ব্যালট পেপার দেওয়া হয়নি। বিএনপির পোলিং এজেন্টদেরও বের করে দেওয়া হয়েছে। একই কেন্দ্রে বেলা একটার দিকে অবৈধভাবে সিল মারতে দেখা গেছে। দায়িত্বরত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা একজন মেয়র প্রার্থীর সরবরাহ করা খাবার গ্রহণ করেছেন।

২০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে সারা দিন কিছুসংখ্যক অনুমোদিত ব্যক্তি কেন্দ্রের ভেতর ঘোরাফেরা করেছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গেও তাদের কথা বলতে দেখা গেছে।

সংস্থাটি জানায়, তারা ৮৮টি কেন্দ্রে ভোটগণনা পর্যবেক্ষণ করেছে। এর মধ্যে ২১টি ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্টরা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ বা আপত্তি জানিয়েছেন। দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তারা ফলাফল শিটে একজন মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা বাড়িয়ে লেখেন। ওই সময় বিএনপির এজেন্ট উপস্থিত ছিলেন না।

ইডব্লিউজি পরিচালক মো. আবদুল আলীম বলেন, ‘রংপুর সিটি নির্বাচনে আমরা কোনো অনিয়ম পাইনি। গাজীপুরে পাওয়া গেছে।’ তিনি বলেন, রংপুর, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জের মতো নির্বাচন দেখতে চান তারা। খুলনা বা গাজীপুরের মতো নির্বাচন প্রত্যাশা করেন না।

ইডব্লিউজির সদস্য মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে রংপুরের মতো বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আমরা প্রত্যাশা করি।’

ইডব্লিউজির আরেক সদস্য মো. আবদুল আওয়াল বলেন, ‘ভোটগ্রহণ শুরুর সময়ে ৮১ দশমিক ৪ শতাংশ কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট দেখা গেছে। ভোট শুরুর পরে তাদের বের করে দেওয়ার হিসাবটি আমাদের পর্যবেক্ষণে আসেনি।’

ইডব্লিউজি সদস্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, কৃষক মো. সাদেকের মতো প্রার্থীদের মাধ্যমে আগে ডামি এজেন্ট দেওয়া হতো। এখন তা দেওয়ার সুযোগ নেই। ২১ দিনের মধ্যে ইডব্লিউজি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে ২৮টি সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সমন্বয়ে ইডব্লিউজি গঠিত হয়। সারা দেশে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে সংস্থাটি।