এবার ড্রাম বাজিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে চান পণ্ডিত সুদর্শন

ড্রাম বাজাচ্ছেন পণ্ডিত সুদর্শন।ছবি : সংগৃহীত
ড্রাম বাজাচ্ছেন পণ্ডিত সুদর্শন।ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ সময় তবলা ও ঢোল বাজানোর দুটি বিশ্ব রেকর্ড আছে তাঁর ঝুলিতে। এবার তিনি বিরতিহীন দীর্ঘ সময় ড্রাম বাজিয়ে রেকর্ড গড়তে চান। পূর্ণ করতে চান বিশ্ব রেকর্ডসের ‘হ্যাটট্রিক’। বলছি যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পণ্ডিত সুদর্শন দাশের কথা।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার সন্তান পণ্ডিত সুদর্শন দাশ আগামীকাল বুধবার তাঁর নতুন রেকর্ডের জন্য বাজানো শুরু করবেন। বাদ্যযন্ত্রের এই সাধক এবার ড্রাম বাজিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করতে চান। স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা থেকে পূর্ব লন্ডনের কমার্শিয়াল রোডের লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমি মিলনায়তনে তিনি বাজানো শুরু করবেন।

পণ্ডিত সুদর্শন দাশ প্রথম আলোকে বলেন, গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ বিশ্ব রেকর্ড গড়ার জন্য তাঁকে কমপক্ষে টানা ১২ ঘণ্টা ড্রাম বাজানোর শর্ত দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কোনো বিরতি নেওয়া যাবে না। তবে সুদর্শন জানান, তিনি কমপক্ষে ১৫ ঘণ্টা বাজিয়ে তারপর থামতে চান। যাতে অন্য কেউ সহজে তাঁর গড়া রেকর্ড ভাঙতে না পারে।

বাদ্যের মোহে বিভোর হয়ে যাওয়ার অসীম ক্ষমতা আছে এই বাঙালি সন্তানের। তবলা বাজিয়ে তিনি যে রেকর্ড গড়েছেন, সে জন্য তাঁকে টানা ২৫ দিনে ৫৫৭ ঘণ্টা ১১ মিনিট বাজাতে হয়েছিল। এরপর ঢোলে রেকর্ড গড়তে তাঁকে বাজাতে হয়েছিল টানা ২৭ ঘণ্টা।

এবারের রেকর্ড গড়ার চ্যালেঞ্জটি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন সুদর্শন দাশ। তিনি রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য আড়াই হাজার পাউন্ড (প্রায় তিন লাখ টাকা) সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার মাধ্যমে এই অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানান তিনি।

সুদর্শন দাশের বাবা অমূল্য রঞ্জন দাশ ও মা বুলবুল রানী দাশ। পণ্ডিত সুদর্শন পূর্ব লন্ডনের তবলা অ্যান্ড ঢোল একাডেমির অধ্যক্ষ। তাঁর প্রতিষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা বাদ্যযন্ত্রে তাল তোলার কসরত শিখছেন। পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস, নিউহ্যাম এবং রেড ব্রিজ কাউন্সিলের অধীনে তিনি স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোর ‘মিউজিক ইন্সপেক্টর’ হিসেবে কাজ করেন।

পণ্ডিত সুদর্শন দাশের হাতে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদ তুলে দিচ্ছেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলর মেয়র জন বিগস। ছবি : সংগৃহীত
পণ্ডিত সুদর্শন দাশের হাতে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদ তুলে দিচ্ছেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলর মেয়র জন বিগস। ছবি : সংগৃহীত

দুটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ার সুবাদে পণ্ডিত সুদর্শন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সহায়তায় অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় বাদ্য বাজিয়েছেন। জানতে চাওয়া হয়েছিল, পণ্ডিত সুদর্শনকে রেকর্ডসের নেশায় পেয়েছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ব্যতিক্রমী কিছু করার মধ্যে অন্য রকম মজা আছে। তবে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার জন্য আপাতত এটাই তাঁর শেষ প্রচেষ্টা।

সবার দোয়া চেয়েছেন সুদর্শন দাশ। রোহিঙ্গা শিশুদের সাহায্যে নির্ধারিত তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। লিংকে ক্লিক করে সহায়তা করা যাবে।