গাজীপুরেও খুলনা মডেলের 'নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন': সুজন

রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে তাদের মূল্যায়ন তুলে ধরে সুজন। ছবি: সুজনের সৌজন্যে
রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে তাদের মূল্যায়ন তুলে ধরে সুজন। ছবি: সুজনের সৌজন্যে

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০১টি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় প্রধান প্রতিপক্ষকে মাঠছাড়া করা, বিএনপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি, নির্বাচনের দিন জোরজবরদস্তি করার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন ছিল নির্বিকার। এসব তথ্য জানিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বলছে, গাজীপুরেও খুলনা মডেলে নির্বাচন হয়েছে, যা ছিল ‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন’। 

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে তাদের মূল্যায়ন তুলে ধরে সুজন। মূল্যায়ন প্রতিবেদনটি পাঠ করেন সুজনের সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার। তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও সুজনের স্বেচ্ছাব্রতীদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, খুলনার নির্বাচনের মতো গাজীপুরেও ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে জোরজবরদস্তি করা হয়েছে। কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট প্রদান, ভোটকেন্দ্র ও আশপাশে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি এবং ভোট প্রদানে বাধা দেওয়া হয়েছে।
সুজন জানায়, গাজীপুরে ভোট দেওয়ার হার ৫৭ দশমিক ২ শতাংশ হলেও ৬১টি কেন্দ্রে ৭৩ থেকে ৯৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ ছাড়া ৪০টি কেন্দ্রে ১৪ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ ধরনের অস্বাভাবিক ভোটের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুজন। প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতের আদেশে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার দিনে লেগুনা ভাঙচুরের অভিযোগে ১৩ জনকে আটক করা হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১০৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এতে একটি ভীতিকর পরিস্থিতর সৃষ্টি হয়। বিএনপির কর্মীরা এলাকাছাড়া হন। মাঠ ফাঁকা হওয়ার নেতিবাচক প্রভাব নির্বাচনী প্রচারে প্রকটভাবে দেখা দেয়। গ্রেপ্তার না করার বিষয়ে আদালত ও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরও আটকের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সুজনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজীপুরেও বিএনপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। তাঁদের অনেককে কেন্দ্রে উপস্থিত হতে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কাউকে কাউকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটকে রেখে ভোটের পরে মুক্তি দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন নির্বিকার ভূমিকা পালন করেছে। গাজীপুরের এসপির বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন। যদিও এর আগে রকিবউদ্দীন কমিশন একটি নির্বাচনে তাঁকে বদলি করার ব্যবস্থা করেছিল।
সুজনের সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে অনেক ক্ষমতা দিয়েছ। তাই কমিশন চাইলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। আগামী তিন সিটি নির্বাচনে তারা নিশ্চয়ই কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন চাইলেই নির্বাচনের কলুষতা দূর করতে পারে। নখ-দন্তহীন বাঘ হতে না চাইলে তাদেরকে সাহসী হয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন।